গাজার ইতিহাস সংরক্ষণে ফিলিস্তিনি ৯ নারীর উদ্যোগ

গাজার ইতিহাস সংরক্ষণে ফিলিস্তিনি ৯ নারীর উদ্যোগ

ছবিঃ সংগৃহীত।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পুরনো বই ও দুর্লভ পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলত সারা বিশ্বের গবেষকদের গবেষণায় সহায়তা করতে নিজেদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে সংরক্ষণের এই প্রকল্প গ্রহণ করে দি আইস অন হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। এর তত্ত্বাবধানে হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নথিভুক্তির কাজ করছেন ফিলিস্তিনের ৯ উদ্যমী নারী। তাঁরা পুরনো বই, পাণ্ডুলিপি, পত্রপত্রিকা, পুরনো নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সংরক্ষণ করেন।

২০১৭ সাল থেকে তাঁরা এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এই উদ্যোগে কাজ করছেন। তাঁদের এই প্রকল্পে সহায়তা করছে ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এর মধ্যে শত বছর থেকে শুরু করে হাজার বছরের পুরনো অনেক গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপি আছে। এর মাধ্যমে ফুটে উঠবে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাস।

কিন্তু ইসরায়েলের অবরোধের ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এই প্রকল্প। গাজা সীমান্তবর্তী এলাকার দীর্ঘ প্রতিবন্ধকতা গবেষণার নথি সংরক্ষণ কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।

প্রকল্পের পুনরুদ্ধারে বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন হানিন আল-সারসাবি। তিনি জানিয়েছেন, এখানে দুর্লভ পত্রিকা, বই, সংবাদপত্র, নথি ও পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের কাজ করা হয়।

কয়েক ধাপে এসব কাজ সম্পন্ন হয়। প্রথমে এসব পাণ্ডুলিপির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি এসব সামগ্রীর কাগজের গুণমান, অম্লতা, কালির স্থিতিশীলতা এবং তা কার্বন বা লোহা হলে এর ধরন পরীক্ষা করে দেখা হয়। এরপর বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা দেখা হয় এবং নরম ব্রাশ বা মেডিক্যাল ফোরসেপ বা কাঁচি ইত্যাদি ব্যবহার করে পৃষ্ঠা পরিষ্কার করা হয়। অতঃপর তা আর্কাইভে যুক্ত করা হয়।

পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের কাজটি খুবই গুরুত্ব বহন করে। বিশেষত আরব ও ইসলামী জগতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সংরক্ষিত হয়। আর দুর্লভ পাণ্ডুলিপি ও বইয়ের গুরুত্ব যত বেশি হবে তা সংরক্ষণের গুরুত্বও তত বেশি হবে।

আইস অন হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হানিন আল-আমসি বলেন, এই প্রকল্পে পিএইচডি ও স্নাতকোত্তরধারী ৯ জন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক কাজ করছেন। তাঁদের আন্তর্জাতিক মান অনুসারে ডিজিটাল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তা ছাড়া গাজা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু একের পর এক ইসরায়েলি বিধি-নিষেধের কারণে প্রকল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

সূত্র : আলজাজিরা