৯ দফা দাবিতে পাবিপ্রবি কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ : প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান

৯ দফা দাবিতে পাবিপ্রবি কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ : প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান

৯ দফা দাবিতে পাবিপ্রবি কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ : প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান

৯ দফা দাবিতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালনের জন্য সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল নয়টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে চাইলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রবেশের বাধা দেয়। একপর্যায়ে উপাচার্যের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা লিটনের ও কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশিদ ডনের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ ধস্তাধস্তির মধ্যেই উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করেন। কর্মকর্তাদের অভিযোগ উপাচার্যের নির্দেশে নিরাপত্তা রক্ষীরা কর্মকর্তাদের গায়ে হাত তুলেছেন এবং কলার চেপে সবাইকে সরিয়ে দিয়েছেন।

 এই ঘটনার পর পরই প্রশাসনিক ভবনের সামনে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রশাসনকে নিয়ে নানান স্লোগান দিতে শুরু করে এবং তাদের দাবি আদায়ের জন্য তাদের শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেয়।

 কর্মকর্তাদের ৯ দফার দাবিগুলো হলো,১/ নীতিমালা অনুযায়ী আপগ্রেডেশন/পদোন্নতির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন/পদোন্নতির দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান; ২. এডহক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মকর্তাদের স্থায়ী নিয়োগ প্রদান; ৩. কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন/পদোন্নতি নীতিমালা সংশোধন; ৪. কর্মকর্তাদের নিয়োগবিধি সংশোধন; ৫. কর্মকর্তাদের শিক্ষাছুটি, লিয়েন ছুটিসহ যাবতীয় প্রাপ্য ছুটি (হয়রানি ব্যতিত) প্রদান: ৬. কর্মকর্তাদের সুযোগে-সুবিধা না পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করা হয়, কিন্তু সুযোগে-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করা হয় না, এমন দ্বৈতনীতি পরিহার করা; ৭. প্রয়াত ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহিদুল ইসলামের সহধর্মিনীর চাকরির ব্যবস্থা করা; ৮. ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার জন্য গঠিত উপকমিটিতে সকল কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ৯. ৪% গৃহ নির্মাণ ঋণ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন জানান, নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি ও এডহক ভিত্তিতে স্থায়ী নিয়োগ সহ ৯ দফা দাবি নিয়ে আমরা সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার জন্য জড়ো হই। কিন্তু উপাচার্য যখন আসে তখন উনাকে উপরে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরাপত্তা রক্ষীরা আমাদের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। এক পর্যায়ে এক নিরাপত্তা রক্ষী আমার গায়ে হাত তোলেন। একজন নিরাপত্তা রক্ষী এভাবে আমাদের গায়ে হাত তুলতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, আমাদের যতই ভয়ভীতি দেখানো হোক আমরা দাবি আদায়ের জন্য কাজ করে যাবো। কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। কিন্তু কর্মসূচির শুরুতেই আমাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। এই উপাচার্য অন্যায়ভাবে আমাদের অনেকগুলো পদোন্নতি আটকে রেখেছে। তিনি শুধুমাত্র তার পছন্দের মানুষদের পদোন্নতি দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা উপাচার্যের কাছের মানুষজনই পাচ্ছেন। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছি। দাবি আদায় না করে মাঠ ছাড়বোনা।

এ বিষয়ে উপাচার্যের পক্ষ থেকে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. নাজমুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কর্মকর্তাদের গায়ে হাত তোলার যে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে সেটি সত্য নয়। এ ধরনের কোন ঘটনা সকালে ঘটেনি। কর্মকর্তা কর্মচারীরা মাননীয় উপাচার্য মহোদয় বরাবর তাদের কতগুলো দাবি দাওয়া দিয়েছন, সেগুলো নিয়ে তারা এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এই অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমরা উনাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে অনুরোধ করেছি। উপাচার্য মহোদয় তাদের দাবিগুলো নিয়ে কাজ করছেন আশা করি শীঘ্রই বাস্তবায়ন হবে।