সাত দিনে ডেঙ্গুতে ৮১ জনের মৃত্যু, ঢাকারই ৬০

সাত দিনে ডেঙ্গুতে ৮১ জনের মৃত্যু, ঢাকারই ৬০

প্রতীকী ছবি

ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছেই না। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ও মৃতের সংখ্যা। ইতোমধ্যে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছর ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬১৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গত সাত দিনেই ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ জনই ঢাকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিরই আটজন। ২৮ আগস্ট মৃত্যু আটজনের মধ্যে ঢাকার ছয়জন, ২৯ আগস্ট মৃত্যু ১৩ জনের মধ্যে ঢাকার সাতজন, ৩০ আগস্ট মৃত্যু সাতজনের মধ্যে ঢাকার পাঁচজন, ৩১ আগস্ট মৃত্যু ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জন ঢাকার, ১ সেপ্টেম্বর মৃত্যু চারজনের মধ্যে ঢাকার একজন এবং ২ সেপ্টেম্বর মৃত্যু ২১ জনের মধ্যে ঢাকারই ১৭ জন।

অন্যদিকে একইসময়ে সারাদেশে ১৫ হাজার ৫১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৪০৭ জন।

চলতি বছর ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৪ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৪৪ জন। মারা গেছেন ৬১৮ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটির ৪৫৬ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরের ১৬২ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়। ফলে এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব, না হলে ডেঙ্গু এবার মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইমিরিটাস অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, শক সিন্ড্রোমের কারণে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানান উদ্যোগ নিলেও কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ২৮১ জন।