ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমের উপর হামলা ও লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের নিচ তলায় এ ঘটনা ঘটে। কর্মকর্তা সমিতির নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। পরে বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ করে কর্মকর্তা সমিতি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাকরীর বয়সসীমা বৃদ্ধি ও পোষ্য কোটায় ভর্তিতে শর্ত শিথিলসহ ১৬ দফা দাবিতে কর্মকর্তারা লাগাতার কর্মবিরতি চলমান থাকলেও প্রশাসনের নির্দেশে কিছু কর্মকর্তা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরমধ্যে অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেনকে কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাতে হিসাব শাখায় যান কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম। এসময় আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে আব্দুল হান্নান, মীর জিল্লুর রহমান, মনিরুল ইসলাম, মীর মোর্শেদুর রহমান, আসাদুজ্জামান মাখন, আব্দুস সালাম, তবারক হোসেন বাদল, আসাদুজ্জামান, জাহিদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হন। তারা কাজ চলমান রাখার পক্ষে কথা বললে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুসাইন মজুমদার, ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আলম, বিপুল খান, বাধনসহ ২০-২৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত হন।

কর্মকর্তা সমিতির নেতাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির কাছে কাজ বন্ধ রাখার কারণ জানতে চান। এসময় শিক্ষার্থীদের কাজ বন্ধ নেই জানালেও নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হট্টগোল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তুই-তোকারীসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাইরে নিয়ে গিয়ে পেটানোর হুমকি দিতে থাকেন। এসময় কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে তারা কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে বাইরে নিয়ে আসেন।

পরে একাডেমিক শাখায় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির দাপ্তরিক কক্ষে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার দাবি করেন সমিতির নেতারা। এসময় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, ‘আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। আমাদের আন্দোলন বানচাল করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশাসনের সুবিধাভোগী কিছু কর্মকর্তা বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাদের ইন্ধনে ছাত্রলীগ সেক্রেটারীর নেতৃত্বে ২০-৩০ জন নেতাকর্মী আমার উপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তারা আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পেটানোর হুমকি দিচ্ছিল। প্রশাসনের ইন্ধনে কর্মকর্তারা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে এসব করছে। প্রক্টর নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কোনপ্রকার পদক্ষেপ নেয়নি। এতে আমরা প্রহ-ভাবে মর্মাহত হয়েছি। আমি আমার সঙ্গে ঘটা ঘটনার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘কর্মকর্তাদের আন্দোলন এটা তাদের নিজস্ব বিষয়। শিক্ষার্থীরা তার কাজ নিয়ে ওই অফিসে গেলে হট্টগোল হচ্ছিল। আমরা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের বাইরে নিয়ে এসেছি। হামলার অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য এমন অভিযোগ করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কাজ করা নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে হট্টগোল হচ্ছিল। আমি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে সেখান বের করে নিয়ে তার কক্ষে দিয়ে আসি। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’