ইবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

ইবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

ইবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নাঈম চৌধুরী নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই ব্যাচের শিক্ষার্থী রিজভী আহমেদ রূপমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার চেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। 

গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে বিভাগটির ২০২ নম্বর কক্ষের সামনে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্যাচের সি আর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাঈম। ওইদিন ক্লাস ওয়ার্ক সংগ্রহ করে নাঈম এবং অন্য সিআর ফেরদৌসসহ শিক্ষকের রুমের দিকে যাচ্ছিলেন। এর আগে থেকেই নাঈমকে ফলো করছিলেন অভিযুক্ত রুপম। নাঈম এবং ফেরদৌস শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হওয়া মাত্রই দরজার সামনে রুপম দৌড়ে এসে পিছন থেকে নাঈমের ঘাড় চেপে ধরে একটি ধাতবের শক্ত বস্তু দিয়ে সজোরে তার মাথায় ও মুখে আঘাত করতে থাকে। মারতে মারতে নাইমকে ফ্লোরে ফেলে দেন রুপম। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সহপাঠীরা নাঈমকে সেখান থেকে রক্ষা করেন। মারধরের ফলে নাঈম তার মাথা, ঘাড় এবং মুখে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন জাহিদকে আহবায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে তদন্ত কমিটি। উক্ত বিষয়ে বিভাগের কোন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোন অভিযোগ বা বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে খামবদ্ধ করে তদন্ত কমিটির আহবায়ক বরাবর পাঠানোর জন্য বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর আরও কয়েকজন সহপাঠী লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। 

লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, 'প্রথম বর্ষ থেকেই রুপম নিজের অস্তিত্বের গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম অ্যাটেনশন-সিকিং কর্মকান্ড, ক্ষমতা জাহির করার প্রচেষ্টা করে আসছে। এছাড়া সে প্রতিনিয়ত ব্যাচের সহপাঠীদের সাথে অশোভনীয় ও অমার্জিত আচরণ করে। বিগত ছয় মাস ধরে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা, বানোয়াট পোস্ট  এবং মন্তব্য করার মাধ্যমে নাঈমকে লাঞ্ছিত করে আসছে।  আমরাও তার দ্বারা মানসিক আক্রমণ এবং হুমকির শিকার হয়েছি।'এছাড়া এর আগে রুপম বিভিন্ন সময়ে বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট নাঈম সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করা, রাজনৈতিকভাবে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করা, ক্লাসে দেরি করে আসা, অনলাইন ক্লাসে অন্য শিক্ষার্থীদের ডিস্টার্ব করা, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সহপাঠীকে হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ সহপাঠীদের। এমনকি গভীর রাতে মেয়ে সহপাঠীদের ফোন দিয়ে বিরক্ত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ ঘটনার দিন নাঈমকে রক্ষা করতে যাওয়া এক নারীসহপাঠীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত রিজভী আহমেদ রূপমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারা একটি গ্রুপ হয়ে অনেকদিন থেকেই আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করে আসছে। ঘটনার দিন প্রথমে নাইম আমার ঘাড়ে খামছি দেয়। পরে আত্মরক্ষার জন্য আমি তার মাথায় আঘাত করি।'

এদিকে তদন্তের বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন জাহিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।