মণিরামপুরে ডেঙ্গু পরীক্ষায় দ্বিগুন অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো

মণিরামপুরে ডেঙ্গু পরীক্ষায় দ্বিগুন অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো

প্রতীকী ছবি।

যশোরের মণিরামপুরে দিনকে দিন ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষার কীট সংকটে ছিল। এ সুযোগে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অধিক মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নজরে আসায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালায়।

এতে সঠিক মূল্য তালিকা না থাকাসহ সরকার নির্ধারিত মূল্যের অধিক অর্থে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায় উপজেলার ৮টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে অর্ধ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর আগেও নানা অনিয়মের কারণে একাধিকবার জেলা সিভিল সার্জন অফিস উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালালেও কাজে আসছে না।

তবে, গত রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কীট আসায় সেই সংকট আর নেই বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার হেলাঞ্চি গ্রামকে ডেঙ্গু’র হটস্পট ঘোষনা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ১৩২ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছেন।

সোমবার ১১ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮ জন। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষায় কীট সরবরাহ না থকায় সুযোগ নেয় প্রাইভেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। কতিপয় অসাধু প্রাইভেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক ডেঙ্গু পরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ উঠে। গত রোববার দুপুর হতে সন্ধ্যা অবধি বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী হাসান ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় অনিয়মের প্রমাণ মেলায় ল্যাব স্বাদ মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৪ হাজার, জিনিয়া প্যাথলজিকে ৮ হাজার, ডক্টর’স ডায়াগনস্টি সেন্টারকে ১০ হাজার, কলম কথা হেলথ কেয়াকে ৫ হাজার, আফতাব মুন্সি নার্সি হোমকে ৮ হাজার, সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তন্ময় কুমার বিশ্বাস সাথে ছিলেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তন্ময় কুমার বিশ্বাস বলেন, ডেঙ্গু প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সরকারি হাসপাতালের বাইরে ডেঙ্গু সনাক্তে সিবিসি চারশো টাকা, এনএস-১ তিনশো, আইজিজি এন্ড আইজিএম নিরীক্ষার জন্য তিনশো টাকা নির্ধারন করে দিয়েছেন। কিন্তু নিয়ম না মেনে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো এসব পরীক্ষায় দ্বিগুন হারে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। হাসপাতালে নির্ধারিত ৫০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

স্বাদ ডায়াগনস্টিক মালিক হাবিবুর রহমান জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় বেশি টাকা নেয়ার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালত হয়েছে। এর আগেও নানা অনিয়মের কারণে একাধিকবার জেলা সিভিল সার্জন অফিস উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরেই ফের স্বমূর্তিতে ফিরে আসে প্রাইভেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক।