ফরিদপুরে তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড একাধিক গ্রাম

ফরিদপুরে তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড একাধিক গ্রাম

ছবিঃ সংগৃহীত।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার দুটি এবং সালথা উপজেলার একটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়েছে এক থেকে তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে। বৃহস্পতিবার বিকাল এবং সন্ধ্যার দিকে এ ঘূর্ণিঝড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে কয়েকশ গাছপালা। এছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে বন্ধ রয়েছে এ তিনটি গ্রামের বিদ্যুৎ।

ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় শতাধিক পরিবারের সদস্যরা এখন কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। 

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের সোনতুন্দী গ্রামে আঘাত হানে টর্নেডো। এক মিনিটের এ ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয় ২১টি বসতঘর। এ সময় ঘূর্ণিঝড়ে হাফেজ মো. সগির মুন্সির (মসজিদের ইমাম) বসতবাড়ির দুটি বসতঘর ভেঙে একেবারেই চুরমার হয়ে যায়। বিধবা লিপি বেগমের একমাত্র আধাপাকা ঘরটির ওপর বিশাল গাছ পড়ে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। সেই সময় লিপি বেগম বাথরুমে থাকায় কোনোরকমে প্রাণে বেঁচে যান। 

এছাড়া লিটু মুন্সি, ফারুক মুন্সি, মুরাদ মুন্সি, দবির মুন্সি, কাইয়ুম মুন্সি, কামাল ঠাকুর, জামাল ঠাকুর, দেলো ঠাকুর, জমিলা বেগম, নিরু বেগম, নিছার কাজি, ছানোয়ার কাজি, আতিক কাজি, ছত্তার কাজির বসতঘরসহ অসংখ্য রান্নাঘর এবং শতাধিক গাছপালা ভেঙে পড়ে। 

বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এবং গাছ পড়ে সোনাতুন্দীর উত্তরপাড়ার একমাত্র ইটের সলিংয়ের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া পুরো এলাকা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে।

বল্লভদি ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে সোনাতন্দী গ্রামের ২১টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাদের থাকা ও খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমি আপাতত কিছু শুকনো খাবার দিয়েছি। 

এদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলায় মাত্র তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে দুটি ইউনিয়নের অন্তত ৬ গ্রামের শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও টগরবন্ধ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ঝড়ে উপড়ে পড়েছে কমপক্ষে দেড় শতাধিক গাছপালা। এছাড়া বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।  

সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই সারাদিন ধরে বৃষ্টি ছিল। বিকালের দিকে হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের ২০ থেকে ৩০টি কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে। 

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে দুই উপজেলার ছয়টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচা-পাকা বাড়িঘর ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এছাড়া কমপক্ষে দুই শতাধিক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। অনেকেই এখন খোলা আকাশের নিচে রয়েছে।