দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমী আজ

দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমী আজ

ছবিঃ সংগৃহীত।

শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে মহিষাসুর মর্দিনী দেবীর আবাহনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আজ মহাসপ্তমী।

ধূপ, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে মন্দিরে- মণ্ডপে বাজছে শঙ্খনাদ। উচ্চারিত হচ্ছে পুরোহিতের মন্ত্রধ্বনি।

 

শুক্রবার রাত ১১টা ২৪ মিনিটে মহাসপ্তমী তিথি শুরু হয়েছে, যা শেষ হবে আজ রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে। তবে আজ সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ, ঘটস্থাপন, সপ্তাদি কল্পারম্ভ এবং মহাসপ্তমীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশের পর ঘটস্থাপন শেষে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন মন্দিরের পুরোহিত।

পুরাণ মতে, নবপত্রিকা প্রবেশ দুর্গাপূজার এক বিশেষ অঙ্গস্বরূপ। নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ নয়টি গাছের পাতা। যদিও বাস্তবে নবপত্রিকা নয়টি পাতা নয়, ৯টি উদ্ভিদ। উদ্ভিদগুলো হচ্ছে কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মানকচু ও ধান।

 

মূলত একটি সপত্র কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করে একজোড়া বেলসহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। স্ত্রীরূপের জন্য দু’টি বেল দিয়ে করা হয় স্তনযুগল। তারপর সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম ‘কলা বউ’।

কথিত আছে নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ দেবী দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীক। এই নয় দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী ঊমা, জয়ন্তাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ড ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী। অর্থাৎ এরাই যেন একত্রে নবদুর্গারূপে পূজিত হন।

 

সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে দেবী দুর্গার পূজা হবে। অর্থাৎ ষোলটি উপাদান দিয়ে মহাসপ্তমীর দিনে দেবী দুর্গাকে পূজা করা হবে। এছাড়া দেবী দুর্গার চক্ষুদানের পর ভক্তরা আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন। মন্দিরে পুরোহিত, আয়োজকসহ অনেক পুণ্যার্থী উপবাস থেকে পূজা শেষে অঞ্জলি দেবেন।

এদিকে শুক্রবার থেকে পূজা শুরু হলেও রাজধানী ঢাকার মণ্ডপগুলোতে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড় তেমন একটা দেখা যায়নি। আয়োজকরা জানান, মহাসপ্তমী থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে। আগামীকাল রোববার মহাঅষ্টমী থেকেই মূলত মন্দিরে ও মণ্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ঢল নামবে। সপ্তমী পূজা উপলক্ষে নানা রঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সী মানুষ সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে হাজির হবেন।