আল্লাহর সাহায্য লাভের দুই উপায়

আল্লাহর সাহায্য লাভের দুই উপায়

ফাইল ছবি

মানবজীবন দুটি অবস্থার সমষ্টি। একটি হলো সুখ-শান্তি এবং অন্যটি হলো কষ্ট-অস্বস্তি। সুখের সময় আল্লাহর কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন এবং দুঃখের সময় ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া মুমিনের দায়িত্ব। জীবনের সকল সংকটে, বিপদ-মসিবতে কীভাবে আল্লাহর সাহায্য লাভ করা যাবে, সেটি আল্লাহ তাআলা বান্দাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ!  তোমরা ধৈর্য এবং  নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ধৈর্যধারণকারীদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা এ কথার নিশ্চয়তা দিয়েছেন, যারা নামাজে প্রার্থনার সঙ্গে সঙ্গে ধৈর্যধারণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাদের সঙ্গে থাকবেন। 

কোরআন ও হাদিসের পরিভাষায় ধৈর্যের তিনটি শাখা রয়েছে। এক. নফসকে হারাম এবং নাজায়েজ বিষয়াদি থেকে বিরত রাখা দুই. ইবাদত ও আনুগত্যে নফসকে বাধ্য করা এবং তিন. যেকোনো বিপদ ও সংকটে ধৈর্যধারণ করা এবং এর বিনিময়ে আল্লাহর তরফ থেকে প্রতিদান প্রাপ্তির আশা রাখা। (ইবনে কাসির)

ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করা সুস্পষ্ট বিষয়। ধৈর্যের কারণে এক সময় আল্লাহর রহমত নাজিল হবে এবং বান্দা সফলকাম হবে। কিন্তু সালাতের মাধ্যমে কিভাবে সাহায্য প্রার্থনা করবে? এর উত্তর হচ্ছে- প্রথমত. সালাতের মাধ্যমে অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে দূরে রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫) নিশ্চয় এটি বিরাট সাহায্য।

দ্বিতীয়ত. সালাতের মাধ্যমে রিজিকে প্রশস্ততা আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আপনার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দিন ও তাতে অবিচল থাকুন, আমরা আপনার কাছে কোন জীবনোপকরণ চাই না; আমরাই আপনাকে জীবনোপকরণ দেই এবং শুভ পরিণাম তো তাকওয়াতেই নিহিত।’ (সুরা ত্বহা: ১৩২)

তৃতীয়ত. যেকোনো সমস্যা ও বিপদে আল্লাহর সাহায্য লাভের অনন্য উপায় হলো নামাজ। হজরত হুজায়ফা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারিম (স.) কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৩১৯; মুসনাদে আহমদ: ৫/৩৮৮)

সুতরাং যে কোনো বিপদাপদে ও সমস্যায় সালাত ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করা যেতে পারে। সালফে সালেহিন তথা সাহাবা, তাবেয়িন ও সত্যনিষ্ঠ ইমামরা এই আমল করতেন।

তবে এই নামাজে নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই; তাই এতে মুসলিম ব্যক্তি তার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো বৈধ দোয়া করতে পারেন। আর নামাজ হলো প্রকৃত মুমিনদের প্রিয় আমল। নামাজ আদায়কারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন। অনুগত বান্দারা ছাড়া কেই নামাজ পড়তে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্যের জন্য ধৈর্যধারণ ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো! আর নিশ্চয় নামাজ হলো আল্লাহর সঠিক অনুগত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য সবার কাছে একটি কঠিন কাজ।’ (সুরা বাকারা: ৪৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে যেকোনো বিপদ মসিবতে ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।