ভুয়া এতিম দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, সরকারি কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের নামে মামলা

ভুয়া এতিম দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, সরকারি কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের নামে মামলা

ছবিঃ সংগৃহীত।

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় সাতটি এতিম খানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) মামলাটি করেন জেলার দুদকের উপ—সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন।

 

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি এতিমখানার জন্য বরাদ্দকৃত ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার মোল্যা। অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেন ওই সাত এতিমখানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

মধুখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার মোল্যা দুজন পরস্পর যোগসাজশে মধুখালী উপজেলার খোদাবাসপুর মোমেজান নেচ্ছা মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি মো. মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শরীফের সহায়তায় প্রকৃত এতিম শিক্ষার্থীর চেয়ে অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫২ লাখ ৯২ হাজার, ভূষণা লক্ষণদিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি মো. মোতালেব হোসেন ও ক্যাশিয়ার মো. মোশারফ হোসেনের সহায়তায় অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫ লাখ ৫৮ হাজার উত্তোলন করেন।

এ ছাড়া মাকড়াইল মাজেদা খাতুন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি মো. আবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রইচ মিয়ার সহায়তায় ১৯ লাখ ৩২ হাজার, ফয়জিয়া মুসলিম এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. মহিউদ্দিনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ১৬ লাখ ৪৪ হাজার, মধুখালী মহিলা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. শহীদুল্লাহর সহায়তায় ১৬ লাখ ৩২ হাজার, গোন্দারদিয়া দারুস সালাম কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মো. আলম বিশ্বাস ও সাবেক সহ—সভাপতি মো. হাফিজুর রহমানের সহায়তায় ১৩ লাখ ৮ হাজার এবং ব্যাসদী লাল বানু অরফানেজের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর ও কোষাধ্যক্ষ মো. আলী আকবরের সহায়তায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫ লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

ফরিদপুর দুদকের উপ—পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ এতিমখানা ও মাদ্রাসার দায়িত্বরত ১৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়।