৭ হাজার প্লাস্টিক বোতলে পূজামণ্ডপের নান্দনিক গেট

৭ হাজার প্লাস্টিক বোতলে পূজামণ্ডপের নান্দনিক গেট

ছবিঃ সংগৃহীত।

শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপের গেটটি দেখলেই চমক লাগবে। তিনতলা বাড়ির আদলে গেট। কিন্তু এটি বিশেষত্ব নয়; এর বিশেষত্ব হচ্ছে গেটটি তৈরি হয়েছে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের পানির বোতলে। অভিনব গেটটি রীতিমতো যশোর শহরে সাড়া ফেলে দিয়েছে।

যশোর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিমানবন্দর সড়কের পাশে গোরাপাড়ায় তৈরি করা হয়েছে এই পূজামণ্ডপের গেট। গেটের প্রায় ৫০ গজ দূরে গোরাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দির। রাস্তার দুই পাশজুড়ে ও ওপরে লাগানো হয়েছে মরিচবাতি। গলিপথসহ বাড়ির সামনে যতটুকু জায়গা রাতের বেলা তা সবই লাল, নীল আলোয় সুসজ্জিত। দিনের বেলায়ও পরিষ্কার, ঝকঝকে, তকতকে।

পানির খালি বোতল দিয়ে গেট তৈরির কারণ জানতে চাইলে মন্দির কমিটির সভাপতি ভরত দাস বলেন, আমরা গোরাপাড়াবাসী প্রতিবারই দর্শনার্থীদের নিত্যনতুন কিছু উপহার দিই। এবছর পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে গেট তৈরি করেছি। পূজা শেষে এই বোতলগুলো পুড়িয়ে ফেলা হবে। এর মাধ্যমে আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।

 

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপংকর দাস বলেন, সারাদেশের মানুষের জন্য আমাদের এলাকার মানুষের পক্ষে একটাই বার্তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জন করুন। যত সুন্দরই দেখতে হোক না কেন প্লাস্টিক পরিবেশবান্ধব না।

এখানে ব্যবহার করা পানির সাদা, সবুজ ও খয়েরি বোতল প্রায় ছয় মাস ধরে সংগ্রহ করা হয়েছে। এলাকার ছেলেরাই করেছেন বোতল সংগ্রহের কাজ। কিছু বোতল কেনা হয়েছে। গেটটি নির্মাণে খরচ পড়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। ব্যতিক্রম ও নান্দনিক এই গেট তৈরিতে প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করেছেন মন্দিরের সংশ্লিষ্টরা।

প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে নান্দনিক গেট তৈরির প্রধান কারিগর সজিব দাস বলেন, এই গেটে সাত হাজার ২০১টি খালি বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। যার বেশিরভাগই সাদা বোতল। এছাড়া প্রায় ১৫ কেজি পেরেক, ১০ কেজি তার এবং প্রায় ৩০ সিএফটি কাঠের বাটাম ব্যবহার করা হয়েছে।

এই গোরাপাড়ায় বসবাস করে ১২০টি দলিত শ্রেণির পরিবার। তারা প্রতিবছরই দুর্গাপূজায় মণ্ডপে ব্যতিক্রমী আয়োজন ও সাজসজ্জা করে থাকেন। ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারের দুর্গাপূজাতেও। মন্দিরে দুর্গা, অসুর, গণেশসহ সব প্রতিমার গায়ের রঙে আনা হয়েছে ভিন্নতা। এবার সবুজের আধিক্য বেশি। প্রতিবার পূজায় যেমন গেট করা হয় নান্দনিকভাবে, তেমনি প্রতিমাগুলোতেও আনা হয় ভিন্নতা।