বৃহস্পতিবার আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’

বৃহস্পতিবার আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’

সংগৃহীত

সাগরের পশ্চিম-মধ্য এলাকায় সৃষ্টি লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। পর্যায়ক্রমে এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘হামুন’। যা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উপকূলেও আঘাত হানতে পারে। রোববার (২২ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে এটি সাগরে নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশ বা ভারতের উপকূলের দিকে আসবে নাকি দুর্বল হয়ে সাগরে মিলিয়ে যাবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অফিস বলছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে একযোগে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করবে। মধ্যপ্রাচ্য, ভারত ও বাংলাদেশে আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হবে। নিম্নচাপটি পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়াবিদরা আরও বলছেন, এটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোলেও সোমবার থেকে পথ পরিবর্তিত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগের দিকে মুখ ঘোরাতে পারে। এর ফলে বিকেল থেকে সারাদেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলায় বৃষ্টি বেশি হতে পারে। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

তবে ‘হামুন’ খুব বেশি শক্তিশালী হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। এটি একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, সোমবার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এখন এটি উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। পরবর্তীতে এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে এগোবে। আগামী ২৬ অক্টোবর নাগাদ সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও বরিশাল উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানান তিনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘হামুন’। সব নির্দেশক বলছে, এটি সাধারণ একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তিনি আরও বলেন, সতর্ক সংকেত ৫, ৬ ও ৭-এর মধ্যে থাকারই সম্ভাবনা বেশি। মহা বিপৎসংকেত জারির কোনো সম্ভাবনা আমরা এখনও দেখছি না।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় রয়েছে। সেটি দুর্বল হলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সিস্টেমটি সবল হবে। তবে বঙ্গোপসাগরেরটি খুবই সাধারণ (মার্জিনাল) একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তিনি বলেন, এটি এখন খুবই ধীর গতিতে এগোচ্ছে। তবে হঠাৎ এগোনোর গতি বেড়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ সৃষ্টি হলে, এটি হবে বছরের দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়। এর আগে গত মে মাসে প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে প্রভাব ফেলে। গত বছরও আরেকটি ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশে উঁচু জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে প্রভাব ফেলে।

এবার ‘হামুন’ নামটি দিয়েছেন ইরানের আবহাওয়াবিদরা। পারসি শব্দ ‘হামুন’ মানে ছোট্ট দৈত্য। সাধারণত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা থেকে বিভিন্ন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের আগাম নাম ঠিক করা হয়।