হত্যা মামলায় ওসি ও দুই পুলিশসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

হত্যা মামলায় ওসি ও দুই পুলিশসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

ছবিঃ সংগৃহীত।

জামালপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাসদস্য আব্দুল বারিককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে রেলওয়ে থানার সাবেক ওসি ও দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিশেষ দায়রা জজ মুহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জামালপুর রেলওয়ে থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌরচন্দ্র মজুমদার, সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সোহরাব আলী, সাবেক কনস্টেবল তপন বড়ুয়া ও জামালপুর রেলওয়ের টিকিট কালেক্টর (টিসি) আনিছুর রহমান।

 

মামলা ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১১ জুলাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাসদস্য আব্দুল বারিক তার ছোট ছেলে মাজহারুল হক বাবুকে বাসা থেকে জামালপুর রেলস্টেশনে নামিয়ে দিয়ে যান। মাজহারুল হক তার তিন বন্ধুকে নিয়ে যমুনা সেতু (পূর্ব) পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের চারটি টিকিট কাটেন। এসময় লোকাল ট্রেন এলে তিনজন এক বগিতে ওঠেন ও মাজহারুল ওঠেন অন্য বগিতে। পরে টিকিট কালেক্টর (টিসি) আনিসুর রহমান মাজহারুলের কাছে টিকিট চাইলে তিনি বলেন যে, তার টিকিটটি অন্য বগিতে তার বন্ধুর কাছে রয়েছে।

একথা শোনার পর মাজহারুলকে ট্রেন থেকে নামিয়ে রেলস্টেশনের একটি রুমে বন্ধ করে রাখেন টিসি। পরে বাবা আব্দুল বারিক স্টশনে গিয়ে ছেলেকে বের করে আনেন এবং রেলওয়ে থানার ওসি ও দুই পুলিশের কাছে ছেলেকে আটকে রাখার কারণ জানতে চান। এনিয়ে তাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারিককে আঘাত করে পুলিশ। তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ সেনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

 

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শাহ মিজানুর রহমান মুকুল বাদী হয়ে জিআরপি থানায় মামলা করেন। মামলায় জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌর চন্দ্র মজুমদার, কনস্টেবল তপন বড়ুয়া, এএসআই সোহরাব ও টিসি আনিসুর রহমানকে আসামি করা হয়।

মামলার দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি শেষে রেলওয়ে থানার সাবেক ওসি ও দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নুরুল করিম ছোটন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।