তামিমের ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে ধোঁয়াশা

ভারতের মাটিতে চলতি ওয়ানডে বিশ্বকাপে বেশ বাজে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয় দিয়ে আসর শুরু করলেও পরের ছয় ম্যাচে টানা হেরেছে লাল-সবুজেরা। টানা হারে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলাও। তাই পয়েন্ট টেবিলে অন্তত সাত-আটে থেকে শেষ করাই এখন বাংলাদেশের লক্ষ্য। এতে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নিতে পারবে লাল-সবুজেরা।

বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের স্কোয়াডে সদস্য হওয়ার কথা ছিল দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবালেরও। এ নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাননি তামিম।

অন্যদিকে একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি; এর পরই সমর্থকরা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন দেশসেরা ওপেনার তামিমের কথা ভেবে। টাইগারদের এমন পারফরম্যান্সে ক্রিকেটপ্রিয় আবেগী সমর্থকরা কতটা মর্মাহত, সেটা উপলব্ধি করছেন তামিম।

দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেন, ক্রিকেট এমন একটা জিনিস যেটা মানুষকে একত্র করে। আমরা ক্রিকেট নিয়ে এতই আবেগী যে যখন ভালো হয় না, তখন মনে হয় দুনিয়া শেষ হয়ে গেল। যখন ভালো হয়, মনে হয় আমরা সব জয় করে নিয়েছি। আমি জানি, এটা কঠিন সময়; আমরা জাতিকে হতাশ করেছি।

ফিটনেস জটিলতা, ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, নানান নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত ভারত বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তামিমের। কিন্তু সেটা নিয়ে আক্ষেপ নেই তার। বরং বাজে সময় পার করা দলের জন্য সমর্থন ও ভালোবাসা চেয়েছেন তিনি। খেলতে যাওয়া ১৫ জন ক্রিকেটারের পাশে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

তামিমের ভাষ্য, এখন একটু কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সবাই। যতটুকু সম্ভব দেশকে সমর্থন করা উচিত। হতাশা কেউ কোনো না কোনো জায়গায় তো বের করে নেয়। একটু চিন্তা করেন, ১৫ জন ছেলে ওখানে গিয়ে চেষ্টা করছে। তাদের পরিবার ও তাদের ওপর কীভাবে প্রভাবটা পড়ছে। দিনশেষে ওরা সবাই মানুষ। আমি খেলি বা না খেলি এটা কোনো বিষয় না। বাংলাদেশ খেলছে। আমাদের সমর্থন প্রয়োজন। দেশকে আমাদের ভালোবাসা প্রকাশ করা প্রয়োজন।

এদিকে গেল জুলাইয়ে নাটকীয়ভাবে অবসর নিয়েছিলেন তামিম। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে ও অনুরোধে অবসরের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেন তামিম। এরপর অধিনায়কত্ব ছাড়লেও কথা ছিল বিশ্বকাপে খেলার। কোমরের ইনজুরির চিকিৎসা নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দুটি ম্যাচ খেলে প্রত্যাবর্তনের বার্তাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পাওয়া তাকে বেশ আহত করেছে, যা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের এ ক্রিকেটার।

অন্যদিকে এদিকে জাতীয় লিগ শুরু হলেও সেখানে খেলছেন না তিনি। তাতে সংশয় দেখা গেছে ভবিষ্যতে জাতীয় দলের জার্সিতে আবার তাকে মাঠে দেখা নিয়ে। বিষয়টি ধোঁয়াশায় রেখেছেন তামিম নিজেও।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটারকে নির্বাচকরা দলে ফেরান কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর এ সিদ্ধান্তের পেছনেও যে নানান নাটকীয়তা ও অ-ক্রিকেটীয় ফ্যাক্টরের বড় ভূমিকা থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই!

নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তামিমের মন্তব্য, আমি খেলি বা না খেলি সেটা ব্যাপার না। বাংলাদেশ খেলছে আমাদের সমর্থন করা উচিত। জানি না, খেলব কি খেলব না সামনে। যদি খেলি, তাহলে মাঠে দেখবেন আর যদি না খেলি, তাহলে সেইম। দোয়া করবেন আমার জন্যে।