তিন সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিলেন মা

তিন সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিলেন মা

ছবিঃ সংগৃহীত।

শরীয়তপুরের নড়িয়াতে পারিবারিক কলহের জেরে তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সালমা বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় দুই শিশু সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন আরেক শিশু ও মা।

রোববার (৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ সালমা বেগম ওই এলাকার আজবাহার মাদবরের স্ত্রী এবং তার সাত বছরের ছেলে সন্তান সাহাবীর। উদ্ধাররা হলেন-আনিকা (৩) ও সোলেমান (১)।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে ভোজেস্বর ইউনিয়নের পাঁচক এলাকার লোকমান ছৈয়ালের মেয়ে সালমা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার শাজাহান মাদবরের ছেলে আজবাহার মাদবরের। বিয়ের পর থেকেই সালমা বেগমের শাশুড়ি মিলি বেগম ও ননদ কলির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। এই নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। শনিবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হলে রোববার সকালে তিন সন্তান সাহাবীর, আনিকা ও সোলেমানকে নিয়ে কীর্তিনাশা নদীতে ঝাঁপ দেয় সালমা। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে নদী থেকে আনিকা ও সোলেমানকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদিকে খবর পেয়ে নিখোঁজ সালমা বেগম ও তার ছেলে সাহাবীরকে উদ্ধার করতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

নিখোঁজ সালমা বেগমের মামা লিটন ছৈয়াল অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগনিকে বিয়ের পর থেকেই শশুড়বাড়ির লোকজন অত্যাচার করতো। শনিবার রাতে তারা আমার ভাগনিকে মারধর করে। এই ক্ষোভে আজ তিন সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে সালমা।

সালমা বেগমের বাবা বলেন, আমার মেয়ে আর নাতিকে ওরা মেরে ফেলেছে। ওদের জন্যই আমার মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সালমা বেগমের স্বামী আজবাহার মাদবর বলেন, আমার স্ত্রীর সঙ্গে কারো ঝামেলা ছিল না। কেন ও আমার বাচ্চাদের নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে তাও জানি না। কয়েকদিন ধরে ওর মাথায় সমস্যা হচ্ছিল তাই ভেবেছিলাম ফকির দেখাবো।

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব   বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সালমা নামের এক গৃহবধূ পারিবারিক কলহের কারণে তিন শিশু সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। দুই শিশুকে স্থানীয়রা উদ্ধার করতে পারলেও মা ও আরেক সন্তান নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।