নোয়াখালীতে প্রবল ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি

নোয়াখালীতে প্রবল ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি

সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। এর কারণে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ার সাথে সকল প্রকার নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে নোয়াখালীর রবিশস্য ও গাছপালার।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে জেলার হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলায় টানা ভারিবর্ষণ শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে বর্ষণের পাশাপাশি ঝড় শুরু হয়। এ সময় আমন ধান, শাকসবজি ও বুরো ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রবল ঝড়ে শত শত ফলদ ও বনজ গাছ উপড়ে পড়েছে।

টানা ভারি বর্ষণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। প্রবল ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের লাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টায় পল্লী বিদ্যুতের সবক’টি ফিডার বন্ধ রয়েছে। ফলে ৫ লক্ষাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) জাকির হোসেন সবকটি লাইন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ঝড়ে বিদ্যুতের ১২টি খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। বেশ কিছু স্থানে তার ছিড়ে গেছে। লাইনগুলো পরীক্ষা করে দেখা ছাড়া চালু করা যাচ্ছে না।

এদিকে, হাতিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিকেল ৩টার পর ৫১ নটিকেল মাইল বেগে দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে ধমকা হাওয়া দ্বীপের উপর দিয়ে বয়ে গেছে।

জানা যায়, তীব্র বাতাসে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে এবং উত্তর পাশে নলচিরা ও সুখচর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের পাশে বসবাস করা কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এখনো সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। সুখচর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ঢালচরের কাছে একটি ফিশিং ট্রলার স্রোতে নদীতে উল্টে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ঝড়ে বিদ্যুতের লাইনে গাছের ডালপালা পড়ে তার ছিড়ে যাওয়ায় সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পুরো হাতিয়া দ্বীপ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। যার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িঘরের যাবতীয় অর্থনৈতিক ও দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

এদিকে, দুপুরে হাতিয়া উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদেরকে দুর্যোগ মোকাবেলায় স্ব স্ব ইউনিয়নে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিপিপি ও পুলিশের প্রতিনিধিরা।