৮৩ বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেল আর্জেন্টিনা

৮৩ বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেল আর্জেন্টিনা

সংগৃহীত

লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেনে দেশেটির ডানঘেঁষা গণতন্ত্রপন্থী নেতা জেভিয়ার মিলে (৫৩)। এই নির্বচানে জয়ের মধ্যে দিয়ে আর্জেন্টিনার ঘরোয়া রাজনীতিতে পেরোনিস্ট পার্টির গত ৮৩ বছরের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছেন মিলে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ও আর্জেন্টিনার সাবেক অর্থমন্ত্রী সের্গিও মেসাকে (৫১) ১২ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, মিলে ব্যাপকভাবে গর্ভপাতবিরোধী, অস্ত্র আইন সহজ করার পক্ষে এবং আর্জেন্টিনার নাগরিক পোপ ফ্রান্সিসের সমালোচক। তার প্রথম দু’টি বৈশিষ্টের সঙ্গে মার্কিন রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টির মতাদর্শের মিল রয়েছে।

আর্জেন্টিনার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশ করেছে আর্জেন্টিনার নির্বাচন কমিশন। প্রাপ্ত ফলে দেখা গেছে, জেভিয়ার মিলেই পেয়েছেন ৫৬ শতাংশ ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সের্গিও মেসা পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাপক মূল্যস্ফীতি এবং তার জেরে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা এবং বাড়তে থাকা দারিদ্রের চাপে বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনায় নির্বাচনের শুরু থেকেই খানিকটা সুবিধাজনক জায়গায় ছিলেন জেভিয়ার। কিন্তু তারপরও তার ৫৬ শতাংশ ভোট অর্জনকে ‘আশার চেয়েও বেশি’ বলে মনে করছেন অনেকেই।

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া তাৎক্ষণিক এক ভাষণে জেভিয়ার বলেন, আমাদের সামনে পাহাড়প্রমাণ সমস্যা অপেক্ষা করছে। এই সমস্যার উৎস মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য। দেশের পরিস্থিতি বেশ খারাপ এবং সত্যিকার অর্থেই আসলে এখন হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। আমরা পিছু হটব না; সামনে এগিয়ে যাবো এবং এই সংকট পরিস্থিতিকে অতিক্রম করব।

গত শনিবার রাতে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজধানী বুয়েন্স এইরেসে জেভিয়ারের শত শত সমর্থক গাড়ি-মোটরসাইকেলের হর্ন বাজিয়ে, স্লোগান দিয়ে, আতশবাজি ফুটিয়ে, রক মিউজিক বাজিয়ে নিজেদের নেতার বিজয় উদযাপন শুরু করেন।

এফরেইন ভিভেরো নামে একজন শিক্ষার্থী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখানে এই ঐতিহাসিক বিজায় উদযাপন করতে এসেছে। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। (জেভিয়ার) মিলে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতীক। মেসা আসলে আমাদেরকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন না, এখন আমরা আমাদের নেতাকে পেয়ে গেছি।’

এদিকে ভোটের পরাজিত প্রার্থী সের্গিও মেসার সমর্থক এবং স্কুলশিক্ষিকা সুসানা মার্টিনেজ বলেন, ‘জেভিয়ারের নীতির কথা ভাবলে আমরা আতঙ্কিত হয়ে উঠি।’