অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল দুর্ভোগ কমাবে : ডিসিসিআই

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল দুর্ভোগ কমাবে : ডিসিসিআই

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল দুর্ভোগ কমাবে : ডিসিসিআই

কর প্রদানে অটোমেশন বাস্তবায়ন দেশের করদাতাদের আয়কর রিটার্নের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ হ্রাস করবে এবং এ ডিজিটাল প্রক্রিয়া সামগ্রিকভাবে কর আহরণ বাড়বে বলে মত প্রকাশ করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। উল্লেখ্য, গতকাল ঢাকা চেম্বার ব্যক্তিগত আয়কর ও রিটার্ন দাখিল শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করে।

তিনি উল্লেখ করেন, নতুন আয়কর আইন-২০২৩ এ করদাতাদের জন্য বেশকিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে পূর্বে রিটার্ন দাখিলে ২৯টি ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার বিধান ছিলো, বর্তমানে তা ১২টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতি সমন্বয় সংক্রান্ত আইনি বিধান সহজ করা, আয়কর নিজে মূল্যায়নসহ আয়কর দাতাদের উদ্দেশ্যে আরও অনেক সুবিধাজনক বিধান নতুন আইনে যুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই সভাপতি জানান, আয়কর  প্রদানের পূর্বে সকল করদাতার নতুন আয়কর আইন বিষয়ে অবগত হওয়া উচিত এবং এই কর্মশালার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা উল্লেখিত আইনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবগত হবেন, যা তাদের নিয়মানুযায়ী ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  

কর্মশালায় এসএমএসি আইটি লিমিটেডের পরিচালক এবং ঢাকা চেম্বারের কাস্টমস, ভ্যাট, আয়কর ও এনবিআর বিষয়ক স্টান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা স্নেহাশিস বড়ুয়া এফসিএ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি নতুন আয়কর আইন ২০২৩-এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি আয়কর হিসাব এবং রিটার্ন দাখিল বিষয়ে সম্যক ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও, অতিরিক্ত কর্তনকৃত কর ফেরত, মূলধনী আয়, শেয়ার ভিত্তিক পেমেন্ট, কর অব্যাহতি, ব্যবসা হতে আয়, ভাড়া হতে আয়, আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয়, সময়সীমা পার হওয়ার পর রিটার্ন দাখিল প্রভৃতি বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর আপীল ও রেয়াত) মো. ইকবাল হোসেন জানান, আয়কর রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়াকে সহজ এবং দুর্ভোগহীন করাই নতুন আয়কর আইনের উদ্দেশ্য। তবে সকল করদাতাকে নতুন এই আইনের বিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই সময়োপযোগী কর্মশালার আয়োজন করায় ঢাকা চেম্বারকে স্বাগত জানান। তিনি আরও জানান, ডিজিটাল অটোমেশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর বিভাগ এবং করদাতার মধ্যে একটি আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।    

  কর্মশালায় আইসিএবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, এফসিএ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য করের পরিধি আরও বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন। তিনি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও করের আওতায় নিয়ে আসার জন্য এনবিআরের প্রতি সুপারিশ করেন। এছাড়াও যুক্তিসঙ্গত করহার এবং সহজতর আয়কর রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া মানুষকে কর প্রদানে আরও উৎসাহিত করবে বলে তিনি মত দেন।  

ঢাকা  ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বি. এন. দুলাল জানান, কয়েক বছর আগেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে গেলে একজন করদাতাকে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো বর্তমানে তা অনেকটাই লাঘব হবে। তা সত্ত্বেও, রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে এখনও করদাতাদের কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে  হচ্ছে। এ বিষয়ে বছরজুড়ে জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচী পালন করলে করদাতাগণ আরও সহজে করপ্রদান করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।  কর্মশালায় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এসএমএসি লিমিটেড উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ‘ট্যাক্স-ডু’ এর মাধ্যমে সহজে রিটার্ন প্রস্তুত ও ট্যাক্স গণনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সূত্র : বাসস