নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা, আবাসন সেবাসহ সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।আজ বুধবার নির্বাচন ভবনে বৈঠক শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, 'বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তাই শুধু নয়, যারা নিজ খরচে আসবেন তারা কোন হোটেলে থাকবেন, কোন এলাকায় পর্যবেক্ষণে যাবেন এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সব মিলিয়ে কমপ্লিট সিদ্ধান্ত নিতে এ সভা হয়েছে।'

তিনি জানান, সার্বিক বিষয়ে বিমান মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে এ সভা হয়েছে।  এটা একটা গতানুগতিক সভা। কেননা, প্রতিটি সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই এই ধরণের সভা হয়। এ বিষয়ে করণীয় কী, আবাসন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা এসব নিয়ে সভা হয়ে থাকে। তার আলোকেই আজকের সভাটি হয়েছে।'সচিব বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে কত সংখ্যক বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথি আসছেন তা চূড়ান্ত হবে মধ্য  ডিসেম্বরে।

তিনি জানান, বিদেশি ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ  নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন, তাদের আসার পর থেকে দেশে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে সমস্ত দপ্তর, মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত তাদের সঙ্গে এ সভা। এই সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন কমিশনের যে বৈদেশিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা আছে, তা অনুসরণ করে যারা নিজ খরচে পর্যবেক্ষণ করতে চান তাদের আগমন এবং ইসি থেকে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেই আমন্ত্রিত মেহমানদের কিভাবে একটি নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া যায়।'

ইসির প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, 'বিদেশি অতিথিদের জন্য বিমানবন্দরে আমরা একটা হেল্প ডেস্ক করি, যেন সহজেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে নির্ধারিত হোটেলে যাবেন। সেখানেও একটা হেল্প ডেস্ক করে থাকি, সেখান থেকে তারা যেন নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য সাংবাদিকরা নিতে পারেন। সভায় তারা কোন হোটেল থাকবে সেটা চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। হঠাৎ অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে।'
তিনি বলেন, "কত জন আসবেন, কোন ক্যাটাগরির আসবেন, সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেমন- প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলে এক রকম আর সচিব আসলে আরেক রকম হবে, নির্বাচন কমিশনার হলে এক রকম হবে নিরাপত্তা। কাজেই কারা আসবেন তা না জানা পর্যন্ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারবো না। তবে তাদের নিরাপত্তাসহ সকল ব্যবস্থা সুন্দরভাবে করা হবে।” 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানান, যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক নিজেদের খরচে আসবেন তারা ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর ইসির আমন্ত্রিতরা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে নিজ খরচে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা ৭ ডিসেম্বরের পর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা কতজন আসছেন তা ১৬ ডিসেম্বরের পর জানা যাবে।'

ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ৮৭ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন জানিয়েছে। আর ৩৮টি দেশ ও চারটি সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আবেদন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে নীতিমালা অনুযায়ী যাদের অনাপত্তি থাকবে তাদের অনুমোদন দেবে কমিশন।অতিথিরা কী যে কোনো জায়গায় যেতে পারবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, তাদের জন্য কোন পদ্ধতিতে কোথায় যাবেন, একটা গাইডলাইন থাকবে, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ৮৭ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন জানিয়েছে। আর ৩৪টি দেশ ও চারটি সংস্থার ১১৪ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। 
উল্লেখ্য, নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি রোববার।বৈঠকে বিমান মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : বাসস