ভিন্ন আঙ্গিকে এতিম পূনর্বাসন কর্মসূচি
সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক: "সবার জন্যশিক্ষা" এই নৈতিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে অভিভাবকহীন, দরিদ্র,অসহায় অথচ মেধাবী তাদেরকে সমাজের আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ১৯৮০ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি সেখ আকিজ উদ্দীন ও জাতীয়পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক শরিফ হোসেন যশোরে গড়ে তোলেন আদ্-দ্বীন শিশুকিশোর নিকেতন। ২০০৩ সালে এটি যশোর বেনাপোল মহাসড়কের মাঝামাঝি নাভারনে স্থানান্তর করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ৫০ জন করে এতিম ছাত্র এখানে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়ালেখা করতো। পরবর্তিতে অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের আর্থ- সামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে গ্রাম গঞ্জেও জীবনযাত্রার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ কে এখন আর না খেয়ে থাকতে হয়না। বাড়িতে বাড়িতে ঝি এর কাজ করতেও দেখা যায়না। অনায়াসে একজন মা এখন শিল্প করকারখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। ফলে,অনেক পরিবার দূরবর্তি কোন এতিমখানায় রেখে সস্তানকে আর বড় করতে ইচ্ছুক থাকেনা। কিন্তু, বিপত্তি টা কিছু জায়গায় থেকেই যায়।
অকালে স্বামী/ স্ত্রী হারানোর পর মা/ বাবা যখন পুনরায় বিবাহ করেন তখন অনেকক্ষেত্রেই নতুন সংসারে আগের ঘরের সন্তানের জায়গা হয়না। তখন, এই সন্তানেরা নিদারুন কষ্টে বড় হতে থাকে। কখনও কখনও তারা বিপথগামী হয়ে পথ শিশু হিসাবে সমাজের সম্পদ না হয়ে বোঝা হয়ে যায়। জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতে। এধরনের শিশুদেরকেই সম্পূর্ণ পারিবারিক পরিবেশে রেখে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সামাজিকভাবে পূনর্বাসনের লক্ষ্যে আদ- দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার কমিউনিটিভিত্তিক এতিম উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। গতবছর আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কুষ্টিয়া জোনে ১০জন এতিমকে আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার পাইলটিং করে চমৎকার ফলাফল পেয়েছে। স্বরেজমিনে এ কর্মসূচি পরিদর্শন করে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার হরিনারায়ন ইউনিয়ন শিবপুর গ্রামের এতিম মাশরাফির মা মিলি খাতুন ও একই উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের লামিয়ার মা ববিতা খাতুন এ প্রতিবেদককে জানান, আদ্-দ্বীনের সহযোগিতায় তাদের সন্তানেরা গতবছরের তুলনায় পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে। আদ্-দ্বীন কতৃপক্ষ তাদের পরিবারে অভিভাবকদের মত সকল বিষয়ে খোঁজখবর রাখে।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া জোনের জোনাল ম্যানেজার জনাব মোঃ ইকবাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উক্ত এতিমদেরকে আমরা নিজেদের সন্তানের মতই দেখভাল করি।তাদের খাওয়া দাওয়া, লেখাপড়ার খোঁজখবর রাখি।শিক্ষকদের সাথে কথা বলে অতিরিক্ত কেয়ার নিতে অনুরোধ করি।কখনও কখনও ফ্রি টিউটরের ব্যাবস্থা করে দিই।এছাড়া,প্রতি এতিমের জন্য আমরা মাসিক ১২০০ টাকা খরচ করি। ভাল ফলাফলের জন্যই চলতি বছর সংস্থা কর্মসূচি সম্প্রসারন করেছে।
আদ্-দ্বীনের পরিচালক জনাব মোঃ ফজলুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে সংস্থায় এরকম ১১০ জন এতিমের পূনর্বাসন বাবদ মাসিক খরচ করা হচ্ছে ১১৭০০০ টাকা।তিনি আরো জানান,আমরা আশা করি, আমাদের নিয়ন্ত্রাধীন এতিমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। তারা দেশের সম্পদ হবে। ভবিষ্যতে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রয়োজনে আদ্-দ্বীনের যেকোন জায়গায় কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হবে।