জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পূরণে স্বেচ্ছাসেবীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পূরণে স্বেচ্ছাসেবীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে

ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে আছে। উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। এসব দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষের পাশে এগিয়ে আসে।

গতবছর সিলেটে বড় ধরনের বন্যা হয়েছিল। সেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যেসব ক্ষতি হচ্ছে সেসব পূরণে স্বেচ্ছাসেবীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

মঙ্গলবার ভলেন্টারি সার্ভিস ওভারসিস ভিএসও-বাংলাদেশ এর আয়োজনে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ভিএসও-বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব খবিরুল হক কামাল।

এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রুনাই দারুস সালামের হাই কমিশনার হারিস ওথমান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) উপ-উপাচার্য প্রফেসর খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন, আইএলও বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার একে এম মাসুমুল আলম ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) হামিদ খান, জি আই জেড বাংলাদেশের হামিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

 

ঢাবি ভিসি বলেন, মানুষের জন্য ছাড় দেয়ার মানসিকতাই হলো বড় স্বেচ্ছাসেবিতা। স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে যুবকদের জন্য ভবিষ্যতে সুন্দর একটি দেশ প্রস্তুত করে রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাধ্যমে দেশকে পরিবর্তন করতে হবে। অতীতে স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে এদেশের স্বেচ্ছাসেবীরা অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষকে রক্ষার জন্য জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে। বাংলাদেশে ২০ লাখ মানুষ স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করছে।  

ভিএসও-বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর খাবিরুল হক কামাল বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫০ হাজার ভিএসও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। ভবিষ্যতে সুন্দর দেশ গড়তে হলে স্বেচ্ছাসেবীদের এগিয়ে আসতে হবে। সব স্বেচ্ছাসেবক একত্রে কাজ করতে পারলে দেশকে একটি সমৃদ্ধির জায়গায় নেওয়া সম্ভব। যারা স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করছে আমরা সব সময় তাদের প্রতি ইতিবাচকভাবে অনুপ্রেরণা দেয়ার চেষ্টা করি।

 

তিনি বলেন, সরকার স্বেচ্ছাসেবকদের নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আমরা আশাবাদী স্বেচ্ছাসেবীরা আরও কাজের সুবিধা পাবেন। টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলা করার জন্য, আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং এটাই কাজ করার উপযুক্ত সময়। আমরা বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়শীল দেশ করতে চাই। সেলক্ষ্যে ভিএসও বাংলাদেশ কাজ করছে।

ব্রুনাইয়ের হাই কমিশনার হারিস ওথমান বলেন, স্বেচ্ছাসেবী হলো বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করা। সবাই এটা করতে পারে না। স্বেচ্ছাসেবী হতে হলে উদার মানসিকতার হতে হবে। এই সেমিনার স্বেচ্ছাসেবীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাজ করার জন্য ভিএসও বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

 

তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাধ্যমে মানুষের জীবনের পরিবর্তন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি এটা স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাধ্যমেই সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। একই সাথে সামাজিকভাবে রক্ষা করতে হবে। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

 

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক হামিদ খান বলেন, পৃথিবীর যত ভালো কাজ হয়েছে তার পিছনে স্বেচ্ছাসেবীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। যত উন্নয়ন আছে সেখানে স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকা আছে। স্বেচ্ছাসেবী কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তরুণ যুবকদেরকে স্বেচ্ছাসেবী কাজে এগিয়ে আসার জন্য সরকার কাজ করছি। সরকার যুব সমাজের কর্মসংসস্থানের জন্য কাজ করছে। সরকার ২২ হাজার যুব সংগঠনকে নিবন্ধন দিয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবীর প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করেছে। এ দেশটিকে এগিয়ে নিতে স্বেচ্ছাসেবী কাজের বিকল্প নেই।

 

আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস-২০২৩ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে যুক্ত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ২টি বিষয়ে আলোচনায় বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ তাদের মূল্যবান বক্তব্য রাখেন এবং আমন্ত্রিত যুবদের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন । 

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলার ২০জন শ্রেষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবী/ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে তাদের অনন্য স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়।