গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়াল

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়াল

সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। যার অর্ধেকই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতের সংখ্যা হালনাগাদ করে।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফলে ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৭৭ জনে। নতুন করে আহত হয়েছে ৯০০ জন। মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার।

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, সংঘাতের ৬২তম দিন বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) গাজার দক্ষিণে বড় শহরগুলোতে হামলা চালিয়ছে ইসরাইলি বাহিনী। অন্যদিকে উত্তর গাজায় কয়েকটি এলাকায় হামাসের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে জড়িয়েছে সেনারা।

আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধান গাদি আইজেনকটের ছেলে গ্যাল মায়ার আইজেনকটসহ দুই সেনা সদস্য গাজায় নিহত হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করার পর এখন পর্যন্ত ৯০ জন সেনা হারালো ইসরায়েল।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলের সেনারা। তিনি বাড়িতে আছেন কিনা তা জানা যায়নি।

নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, 'গতকালই আমি বলেছিলাম যে গাজা ভূখণ্ডের যেকোনো জায়গায় আমাদের সেনারা পৌঁছাতে পারবে। আজ আমাদের সেনারা সিনওয়ারের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে। হতেই পারে যে তিনি ওখানে নেই। তিনি পালিয়েও যেতে পারেন। তবে আজ না হয় কাল, তাকে ধরা হবেই।'

জাতিসংঘের প্রধান আন্তেনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, গাজার কোনো এলাকাই আর নিরাপদ নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গুতেরেস বলেছেন, 'গাজায় পুরো মানবিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে। ফিলিস্তিন তো বটেই, গোটা অঞ্চলের শান্তি ও সুরক্ষার ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।'

গুতেরেস জানিয়েছেন, 'এই পরিস্থিতি যেকোনো মূল্যে এড়াতে হবে।' ২০১৭ সাল থেকে গুতেরেস জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের পদে আছেন। এই প্রথম তিনি জাতিসংঘের চার্টারের আর্টিকেল ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সামনে গাজার বিষয়টি নিয়ে এলেন।

গুতেরেস বলেছেন, বর্তমানে গাজায় যে পরিস্থিতি রয়েছে, তাতে মানবিক ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। যুদ্ধবিরতি হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে

অপরদিকে জি-৭ নেতারা বুধবার একটি ভিডিও বৈঠক করেছেন। তাদের মত হলো, গাজায় সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। এর জন্য যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। তারা ইরানের কাছেও আবেদন জানিয়ে বলেছে, তারা যেন হিজবুল্লাহ বা হুতি যোদ্ধাদের সমর্থন না করে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণে হামাসের হামলার জবাবে গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে এক হাজার ২০০ জন।