বগুড়ায় গরু মেলা শুরু, থাকছে গরুর র্যাম্প শো
সংগৃহীত
দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গরু নিয়ে বগুড়ায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী গরু মেলা। শুক্রবার বেলা ১১টায় মমইন ইকো পার্কে এই গরু মেলার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বগুড়া-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে গো খাদ্যের দাম চড়া। অপরদিকে মাংসের দামও বেশি। তাই মাংসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দেশে গরুর উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। মেলার মাধ্যমে সবাই গরুর বিভিন্ন জাত সম্পর্কে জানতে পারবে। বাংলাদেশের মাংসের যে চাহিদা তা মেটানোর উদ্দেশ্যেই মেলার আয়োজন। এখান থেকে উদ্যোক্তা তৈরি হবে। বর্তমানে দেশে গোখাদ্যের দাম কমানোর জন্য সরকার কাজ করছে। প্রাণিসম্পদ খাতটা আরও কীভাবে বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে এই মেলা সহায়ক হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। বাংলাদেশ ডেইর ফামর্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদার, এসিআই এগ্রিবিজনেস এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি, টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগেম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরঙ্গ গরু মেলার সদস্য সচিব, অর্ক খান, রাহাত খান, সদস্য রাকিবুল ইসলাম, আতিকা এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী খামারি আব্দুর রহমান ও খামারি সাকিব। এ মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন। মেলা শেষ হবে আগামীকাল শনিবার।
মেলার মাঠে লম্বা লাইন করে গরুগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। খামারির লোকজন গরুর নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। গরুর খাবার দেওয়া হচ্ছে। মেলায় রয়েছে বিভিন্ন মূল্যের আকর্শনীয় গরু।
ব্রাহামা, আরসিসি, নর্থ বেঙ্গল গ্রে, শাহীওয়াল, সিজারিয়ান, ভুট্টীসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু মেলায় রয়েছে। এসব উন্নত জাতের গরু থেকে প্রচুর পরিমাণে মাংস ও দুধ উৎপাদন হচ্ছে। মেলার মাঠে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের কাছে বেশি আকর্ষণ ২৭ ইঞ্চি উচ্চতার ভুট্টী জাতের গরুকে ঘিরে। ছোট গরু দেখে সবাই মুগ্ধ।
মেলায় আসা আর কে এগ্রোর স্বত্তাধিকারী রাহাত খান জানান, গরুর এত বড় আয়োজনের মেলা কখনও দেখিনি। মেলায় আমি খামারের সেরা ৩টি গরু নিয়ে এসেছি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খামারিরা এসেছেন এখানে। তিনি আরও জানান, উন্নত জাতের গরু খামারিরা মোটাতাজা করেন। মাংস থেকে আমিষ ও দুধ থেকে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়। এসব জাতের গরু পালন করলে দেশে আমিষ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
দিনাজপুর থেকে আসা সাহেব এগ্রে ফার্মের স্বত্তাধিকারী সাহেব আলী জানান, মেলায় বিভিন্ন জাতের গরু দেখতে এসেছি। গরু পছন্দ করছি। দাম সাধ্যের মধ্যে থাকলে আমার খামারের জন্য বেশ কিছু গরু কেনার ইচ্ছা আছে।
মেলার প্রধান সমন্বয়ক তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব জানান, ব্যতিক্রমী এ মেলায় কয়েক’শ খামারি তাদের সেরা গরু তুলেছেন। এছাড়াও মেলায় রয়েছে গয়াল, মহিষ, ছাগল, দুম্বা, ভেড়াসহ নানা জাতের পোষা প্রাণি ও পাখি। মেলায় ১৫০টিরও বেশি স্টল রয়েছে। বাংলাদেশের সেরা আকর্ষণীয় গরু, ছাগল, ঘোড়া, ভেড়া ও দুম্বাসহ নানা পশু মেলায় উঠেছে। এছাড়াও মেলায় আড়াই শ’র মতো খামারি রয়েছেন। সেই সাথে মেলার মূল আকর্ষণ হিসেবে গরুর র্যাম্প শো অনুষ্ঠিহ হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মেলায় ৭২ টি পুরস্কার প্রদান করা হবে।
তিনি আরও জানান, প্রান্তিক খামারীদের জন্য এই মেলা একটি বড় সুযোগ। এখানে তারা পালন করা প্রতিটি গরু ভালো দামে দেশের স্বনামধন্য খামারিদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এ মেলার মাধ্যমে সকল খামারিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
