আজ বান্দরবান হানাদার মুক্ত দিবস

আজ বান্দরবান হানাদার মুক্ত দিবস

সংগৃহীত

১৯৭১ সালে বিজয়ের একদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান পার্বত্য জেলা (তৎকালীন বান্দরবান মহুকুমা) থেকে পাকহানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। এর মধ্যে দিয়ে ১৪ ডিসেম্বর ঘোষিত হয় বান্দরবান হানাদার মুক্ত দিবস।

১৯৭১ সালে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করতে যুদ্ধ শুরু হয় বান্দরবানের দুর্গম সীমান্ত এলাকায়। দুর্গম গহীন অরণ্যে বর্তমান রোয়াংছড়ি উপজেলা নোয়াপতং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আন্তাহা পাড়া, কানাইজো পাড়ার পাহাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৬ নভেম্বর ১৯৭১ সালে ভোর ৪টায় মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর শুরু হয় শত্রুবাহিনীর আক্রমণ। মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বদেন তৎকালীন ইপিআর এর সুবেদার মেজর তাহের মোহাম্মদ আলী ওরফে টিএমআলী (অবাঙালী-বিহারী) প্রায় চার ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর যুদ্ধ থামে সকাল ৮টায়।

কানাইজো পাড়া গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী মং চ উ মারমা’র তথ্য মতে, ১৫ নভেম্বর সারারাত পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চলে মুক্তিযোদ্ধাদের। সেই যুদ্ধে শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার সুবেদার মেজর টিএমআলী। পরবর্তী সময়ে বান্দরবানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে বিতাড়িত করেন পাকহানাদার বাহিনীকে। এরপর ১৪ ডিসেম্বর পাকহানাদার মুক্ত হয় বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার সম্মানীয় ক্যাপ্টেন (অব.) আবুল কাশেম চৌধুরী বীরপ্রতীক জানান, তৎকালীন বান্দরবান মহুকুমা প্রশাসক শুক্কুর আলী, বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ বোমাংগ্রী রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র মুহুরীর নেতৃত্বে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয় বান্দরবান হানাদার মুক্ত দিবস। বান্দরবান জেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ একমাত্র খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা তাহের মোহাম্মদ আলী (টিএমআলী) বীরপ্রতীকের স্মৃতি রক্ষার্থে তার শহীদ হওয়া স্থানটিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সম্মানীয় ক্যাপ্টেন (অবঃ) আবুল কাশেম চৌধুরী বীরপ্রতীক।

১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান হানাদার মুক্তদিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসুচী গ্রহণ করেছে।