অসহায়দের মাঝে আদ্-দ্বীনের শীতবস্ত্র বিতরন কর্মসূচি

অসহায়দের মাঝে আদ্-দ্বীনের শীতবস্ত্র বিতরন কর্মসূচি

প্রতিবেদক

বিশেষ প্রতিনিধি: শিক্ষার বাতিঘর আদ্-দ্বীন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবন জীবিকার উন্নতিকল্পে ১৯৮০ সাল থেকে কাজ করে আসছে। শুরুটা হয়েছিল যশোরে একটি এতিমখানা দিয়ে।নাম ছিল আদ্-দ্বীন শিশু কিশোর নিকেতন। শুরু করেছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি সেখ আকিজ উদ্দীন ও জাতীয়পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক শরিফ হোসেন। পরে প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরেন সেখ আকিজ উদ্দীনের বড় ছেলে ও অধ্যাপক শরীফ হোসেনের বড় জামাতা ডা. শেখ মহিউদ্দীন। এতিম খানার আঁতুড়ঘর পেরিয়ে সুদীর্ঘ ক্লান্তিহীন পথচলায় আদ্-দ্বীন হাসপাতাল এখন সিঙ্গাপুর টু নয়াদিল্লীর মধ্যে সবথেকে বড় হাসপাতাল যা গরিবের হাসপাতাল নামে সারাদেশে পরিচিত ও সমাদৃত।

সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় বিশ্বায়ন উন্নতির পাশাপাশি দেশের ও উন্নতি হয়েছে প্রায় সকল সেক্টরে। গ্রাম গঞ্জে সারিসারি মাটিরঘর,নসন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার, ঘরে ঘরে হারিকেনের/কূপের আলো এখন প্রায় অনেকটা রুপকথার মত।

কিন্তু, তারপরও, প্রবাদ বাক্যের মত " কুপের নিচেই অন্ধকার থাকে" বলে কিছু কথা থেকে যায়। খুব কম হলেও সমাজে এমন কিছু মানুষ এখনও আছে যারা বিশেষ কোন কারনে হয়তো অনেক পিছিয়ে পড়েছেন। হয়েছেন একেবারেই নিঃস্ব, সহায় সম্বলহীন, ছিন্নমূল। জীবন সাহাহ্নে এসে একটু রাতে ঘুমানোর মত পরিবেশও নেই। শীতবস্ত্রের অভাবে রাতে ঘুমাতে পারেননা অনেক অসহায় ঠিকমত।

 আদ্-দ্বীনের নির্বাহী পরিচালক আজন্ম সমাজসেবক ডা. শেখ মহিউদ্দীন কর্মজীবনের শুরু থেকেই ব্যক্তিগত উদৌগে এসব অসহায় মানুষদের সাধ্যমত শীতবস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতেন। ২০১৭ সালে তাঁর চিন্তাধারায় নতুনমাত্রা সংযোযিত হয়। তিনি উদ্যোগ নেন তাদেকে সাধারন শীতবস্ত্র নয়, দিবেন উন্নতমানের শীতবস্ত্র যাতে রাত্রে একটু নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন।শুরু করেন অসহায়দের মাঝে উন্নতমানের লেপ বিতরন কর্মসূচি। প্রতিবছর প্রায় ১২-১৩ হাজার লেপ বিতরন করতেন নিজ কর্মএলাকায়।

গতবছর ২০২২ ইং সাল হতে কর্মসূচির ৩য়মাত্রা সংযোযিত হয়। জীবন সাহাহ্নে অসহায়রা যেন শীতে আরো পরিতৃপ্ত হতে পারে। তিনি পরামর্শ দেন লেপ নয় এখন থেকে দিতে হবে উন্নতমানের কমফোর্টার।

স্বরেজমিনে রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার আদ-দ্বীন পাংশা শাখার কমফোর্ট বিতরনকালীন রিজিওনাল ম্যানেজার নুরুজ্জামানের সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা হলো মাঠকর্মিদের মাধ্যমে এমনভাবে জরিপ করে তাদের বের করে আনা যাতে সমাজের কারোর কোন অভিযোগ না থাকে। তাঁর ০৬ টি শাখাতে এবছর ৫০৫ জন অসহায়কে উন্নতমানের কমফোর্টার দেয়া হচ্ছে। উপস্থিত গ্রহিতাকে অনেক খুশি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে দেখা যায়।

এবিষয়ে আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার এর পরিচালক মো. ফজলুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, " আদ্-দ্বীনের আজীবন খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি, মেধাবীদের বৃত্তি প্রদান কর্মসূচি, সদস্য পরিবারের স্বাস্থ্য সহায়তা কর্মসূচি, আশ্রায়ন কর্মসূচির মত অসংখ্য মানবিক কর্মসূচির মধ্যে অসহায়দের মাঝে প্রতিবছর শীতবস্ত্র বিতরন কর্মসূচি একটি। এ কর্মসূচির বিশেষত্ব হলো আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সদস্য পরিবারের বাহির হতে একেবারেই অতি অসহায় খুঁজে বের করা। নির্বাহী পরিচালক মহোদয়ের পরামর্শক্রমে আমরা প্রচারবিমুখভাবে কাজটি করার চেষ্টা করে থাকি। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ৮৫৩০ জন অসহায়কে কমফোর্টার বিতরনের উদৌগ নেয়া হয়েছে এবং এ মুহুর্তে বিতরন প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে।"

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মতামত দেন, "অন্যান্য সংস্থা এমনকি দেশের সম্পদশালী বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ যদি এধরনের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতেন তাহলে প্রচন্ড শীতে কোন অসহায়কে মনে হয় আর কষ্ট পেতে হতোনা। এমনকি শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ কমিয়ে মৃত্যুর পরিমান ও কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।