গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ ইহুদিদের

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ ইহুদিদের

সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের আট শহরে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেছে একটি ইহুদি সংগঠন। আবার গতকাল শুক্রবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের পশ্চিম তীর সফরের দিনে অঞ্চলটির জেনিন শরণার্থী শিবিরে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল। এদিকে গতকাল ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা তিন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে যার মধ্যে দুজন সেনাও রয়েছে।

ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হনুক্কাহ উৎসবের অষ্টম রজনী উপলক্ষ্যে ‘জিউশ ভয়েস ফর পিস’ নামের একটি সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের আট শহরে বিক্ষোভ আয়োজন করে। এই সংগঠনের বিক্ষোভে বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রায় ৯০ জনের মতো বিক্ষোভকারী নিউ ইয়র্ক অ্যাভিনিউ অবরোধ করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সড়কটির সঙ্গে নর্থ ক্যাপিটাল স্ট্রিটের চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশ বিকল্প পথে যান চলাচল সচল রাখে। সংগঠনটি আরও বিক্ষোভ করে বস্টন, আটলান্টা, শিকাগো, মিনিয়েপলিস, সিয়াটল, পোর্টল্যান্ড এবং ওরেগন শহরে। ইহুদি সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের খবর দেয় এভাবে-‘হনুক্কাহর অষ্টম রজনীতে আট শহরে, আট সেতু’। তারা আরও বলে, ‘আমরা এখানে এসেছি, সারা দেশে ব্যাপক জমায়েত হচ্ছি, আমাদের সংখ্যা আরও বাড়ছে, আমরা বলতে চাইছি, অনেক হয়েছে, আর না।’ ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভকারীরা একটি মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় কমপক্ষে ৩০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভকারীরা গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।

গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর গাজা, খান ইউনিস ও রাফাহর বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তেলআবিব যা গতকালও অব্যাহত ছিল। খান ইউনিসে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুই শিশুসহ চারজনকে হত্যা করে তারা। এখানে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে হামলা হয়েছে। রাফাহর কুয়েত হাসপাতালের একটি আবাসিক ভবনে হামলা হয়েছে। গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ১৮ হাজার ৭৮৭ জন ফিলিস্তিনি।

এদিকে গতকাল ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হামাসের হাতে থাকা তিন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রথমে ২৮ বছর বয়সী ইসরায়েলি এলিয়া টোলেদানোরর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে সংগীত উৎসব থেকে ধরে নিয়ে যায় হামাস। এরপর আরও দুজন সেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই দুজনকেও হামাস গত ৭ অক্টোবর জিম্মি করে নিয়ে যায়। ওই দুই সেনার নাম হচ্ছে নিক বেইজার এবং রন স্কিরম্যান। তাদের বয়স ১৯ বছরের মতো।

গতকাল ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে পশ্চিম তীর সফররত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এদিন পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ৬০ ঘণ্টব্যাপী অভিযান শেষ করে ইসরায়েল। এই অভিযানে ১২ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অভিযোগ উঠেছে, জেনিনের একটি মসজিদে গিয়ে ইহুদি ধর্মের প্রার্থনা সংগীত গেয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।