দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ে পাকশীর ডিআরএম বদলী!

দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ে পাকশীর ডিআরএম বদলী!

ছবিঃ সংগ্রহীত

পাবনা প্রতিনিধি

পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোঃ আসাদুল হককে বদলির প্রজ্ঞাপন জারী করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। একই পদে চলতি দায়িত্বে নিয়োগ করা হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর প্রধান সংস্থাপন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে।  রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ আব্দুর রহিম ৮ জুলাই ২০২০ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত ৫৪.০০.০০০০.০৪০.১৯.০২৭.১৮.৯৫ নং স্মারকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন। 
ওই প্রজ্ঞাপনে পাকশীর বদলী হওয়া ডিআরএম আসাদুল হককে কোথায় পদায়ন করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, বৃটিশদের নির্মিত পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনটি দেশ স্বাধীনের পর তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বর্তমান সরকার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প লাইনসহ এই জংশন স্টেশনটি যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের লক্ষে ৩৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। স্টেশনের প্লাটফর্ম উচুকরণ, যাত্রী ছাউনি ( শেড) নতুন করে তৈরি, মেরামত ও সংস্কার, নতুন রেলপথ তৈরি, সংস্কার, স্টেশনের টয়লেট ও বিশ্রামাগার এবং বসার স্থান আধুনিকায়ন, পুরো ইয়ার্ড ডিজিটালে রূপান্তরসহ নানা উন্নয়নমুখি ও যাত্রী সেবার লক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এ সকল নির্মাণ কাজে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ স্থানীয়দের। নানা অনিয়ম, দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরপরই ৩০ জুন ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করতে নানা পদক্ষেপ পরিদর্শণে আসনে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ। তিনি পরিদর্শন ও বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলেন।
পরিদর্শনকালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের এ সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।  রেলওয়ে জনগণ তথা রেলপথে যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
৪ জুলাই ঈশ্বরদী রেলওয়েতে আকষ্মিক নানা নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও পরিদর্শনে আসেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা। তিনিও প্লাটফর্মসহ নির্মাণ কাজের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে দেখেন। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, রেলপথে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি, সিস্টেমের উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার।  রেলপথের ধারাবাহিক উন্নয়নে কেউ বাঁধা সৃষ্টি করে অনিয়ম, দূর্নীতি বা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে তাকে কোন ধরণের ছাড় নয়। দুর্নীতিবাজ, অসৎ ও অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ, সদ্য নিয়োগকৃত ডিআরএম মোঃ শহিদুল ইসলাম ও সদ্য বদলী হওয়া ডিআরএম আসাদুল হকের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও কেউই ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠায় ডিআরএম আসাদুল হককে বদলি করা হয়েছে। সদ্য নিয়োগকৃত ডিআরএম শহিদুল ইসলাম অসুস্থতার কারণে তিনি এখনও পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগদান করেননি। তবে কি নাগাদ তিনি যোগদান করবেন এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। রেলওয়েতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিব্রতকর পরিবেশ সৃষ্টি করায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তড়িৎ গতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।