জুমার সুন্নত নামাজের ফজিলত

জুমার সুন্নত নামাজের ফজিলত

ফাইল ছবি

জুমার খুতবা ও নামাজ শুরু হওয়ার আগে সুন্নত পড়ার ব্যাপারে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যতটুকু তাওফিক হয় যেন নামাজ পড়ে। পাশাপাশি জুমার দিনের করণীয় এ সুন্নত ও জুমার নামাজের ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।

হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত। তাহলো-

১. হজরত আতা খোরাসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নুবাইশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস বর্ণনা করতেন যে, ‘মুসলিম যখন জুমার দিন গোসল করে মসজিদের দিকে রওনা হয়, কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকে, ইমাম (খুৎবার জন্য) বের হয়নি দেখলে যে পরিমাণ ইচ্ছা নামাজ পড়ে, ইমাম বের হয়ে থাকলে বসে যায় ও চুপচাপ শুনতে থাকে, একপর্যায়ে ইমামের নামাজ ও কালাম সমাপ্ত হয়, তাহলে এ ব্যক্তির এ সপ্তাহের সব গুনাহ যদি মাফ না-ও হয় এ তো অবশ্যই হবে যে, পরবর্তী জুমার জন্য তা কাফফারা হয়ে যায়’। (মুসনাদে আহমদ খন্ড ৫, পৃ. ৭৫, ২০৭২১)

২. হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো পুরুষ যখন জুমার দিন গোসল করে, সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে বা ঘরে যে সুগন্ধি আছে তা ব্যবহার করে, এরপর (জুমার জন্য) বের হয় এবং (বসার জন্য) দুই জনকে আলাদা করে না, এরপর তাওফিক মতো নামাজ পড়ে এবং ইমাম যখন কথা বলে তখন চুপ থাকে, তাহলে অন্য জুমা পর্যন্ত তার (গুনাহ) মাফ করা হয়’। (বুখারি ৮৮৩; মুসনাদে আহমদ ৮/৪৩, ২৩৭১০; ইবনে হিববান ২৭৭৬)

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে গোসল করে, এরপর জুমায় আসে, এরপর তাওফিক মতো নামাজ পড়ে, এরপর চুপ থাকে (ইমাম) তার খুতবা সমাপ্ত করা পর্যন্ত, এরপর তার সঙ্গে নামাজ পড়ে, তার অন্য জুমা পর্যন্ত ও আরো তিন দিনের (গুনাহ) মাফ করে দেওয়া হয়’। (মুসলিম ৮৫৭)

৪. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে জুমার দিন গোসল করে ও মিসওয়াক করে, তারপর সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, নিজের একটি উত্তম পোশাক পরিধান করে, এরপর বের হয় ও মসজিদে আসে এবং মানুষের কাঁধ ডিঙ্গানো থেকে বিরত থাকে, এরপর যে পরিমাণ ইচ্ছা রুকু (নামাজ আদায়) করে, এরপর ইমাম যখন বের হয় তখন থেকে তার নামাজ সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকে, তাহলে এ জুমা থেকে আগের জুমা পর্যন্ত যা (গুনাহ) হয়েছে তার কাফফারা হয়ে যায়। (বর্ণনাকারী) বলেন, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, এর সঙ্গে আরো তিন দিনের (গুনাহ মাফ হয়)। আল্লাহ তাআলা নেক আমলকে দশগুণ বানিয়ে দেন’। (মুসনাদে আহমদ ৩/৮১, ১১৭৬৭; আবু দাউদ, ৩৪৩)

৫. হজরত আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে জুমার দিন গোসল করে, এরপর তার পোশাক পরিধান করে, তার কাছে সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, এরপর ধীরস্থিরভাবে জুমার দিকে যায়, কাউকে ডিঙ্গিয়ে (সামনে) যাওয়া থেকে বিরত থাকে, কাউকে কষ্ট দেয় না, তাওফিক মতো রুকু (নামাজ আদায়) করে, এরপর ইমাম নামাজ সমাপ্ত করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার দুই জুমার মাঝে যা (গুনাহ) হয়েছে  তা মাফ করে দেওয়া হয়’। (মুসনাদে আহমদ ৫/১৯৮, ২১৭২৯)

ইয়া আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহকে জুমার খুতবার আগে ইখলাসের সঙ্গে সঠিক পন্থায় সুন্নত নামাজ আদায় করার এবং জুমার নামাজের পরিপূর্ণ ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।