গাজায় নিহত ও নিখোঁজ ২৯ হাজার, থামছে না ইসরায়েল

গাজায় নিহত ও নিখোঁজ ২৯ হাজার, থামছে না ইসরায়েল

সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ও নিখোঁজের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ এমন তথ্য জানিয়েছেন।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, অন্তত ৭ হাজার ফিলিস্তিনি এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন। আর গাজার অন্তত ৮০ হাজার মানুষ হাসপাতালের সেবা নিতে পারছেন না।

গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৬ হাজার ১৬৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন সাত হাজার। নিখোঁজরা সবাই মারা গেছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি সেনারা গত ২৪ ঘন্টায় ১৪টি গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের হামলায় ১৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় হতাহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বোমা হামলায় সামগ্রিকভাবে গাজার জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। এ ভয়াবহ হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। সেখানে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছে।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।

এদিকে গাজাজুড়ে বিভিন্ন রোগের বিস্তার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়াসুস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারী লোকেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার রেকর্ড উল্লেখ করে তিনি জানান, গাজার প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছেন। এছাড়া সেখানে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৪০০টির বেশি ডায়রিয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অর্ধেকই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। এছাড়া জন্ডিস, চিকেন পক্স ও মেনিসজাইটিসসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

হামাসের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন যে, ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার জন্য সেখানে যেকোনো আন্তর্জাতিক বাহিনীকে স্বাগত জানানো হবে। আনাদুলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক বাহিনী যদি ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে এবং দখলদারিত্বের অবসান করতে চায়, তাহলে তাদের স্বাগত জানাই।'

সম্প্রতি ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্য দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সাথে দেখা করেছেন। তারা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা করেছে।