স্বামীর মৃত্যুর ভুল খবর শুনে স্ত্রীর আত্মহত্যা

স্বামীর মৃত্যুর ভুল খবর শুনে স্ত্রীর আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

হাসপাতালের দেয়া ভুল তথ্যের জন্য আত্মহত্যা করেছেন সোনা সামন্ত রায় নামের এক নারী। সোনার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ তাকে জানায় যে তার স্বামী মারা গেছেন। আর সেই শোক সামলাতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সোনা। কিন্তু পরে জানা যায় সোনার স্বামীর মৃত্যু হয়নি, তিনি বেঁচে আছেন। মারা গেছেন অন্য একজন।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওড়িশার ভুবনেশ্বরে। এই ঘটনার জেরে হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, এসি বিস্ফোরণের কারণে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল করে ওই ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর করেছিল সোনার পরিবারে কাছে। সোনা তখন ভেবেছিলেন যে তার স্বামী মারা গেছেন। সেই শোকেই তিনি আত্মহত্যা করেন। কিন্তু আসলে তার স্বামী বেঁচে আছেন।

সোনার স্বামীর নাম দিলীপ সামন্ত রায়। তিনি পেশায় একজন এসি মিস্ত্রি। গত ২৯ ডিসেম্বর হাসপাতালে দিলীপসহ চারজন এসি সার্ভিসিং করছিলেন। সেই সময় এসিতে বিস্ফোরণ ঘটে। ফলে তারা সকলেই দগ্ধ হন। সকলকে গুরুত্বর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় জ্যোতিরঞ্জন মল্লিক নামে দিলীপের এক সহকর্মীর মৃত্যু হয়। তখন হাসপাতালের পক্ষ থেকে দিলীপের পরিবারকে জানানো হয় যে দিলীপের মৃত্যু হয়েছে। এরপর দেহটি দিলীপের পরিবারকে স্থানান্তর করা হয়। সেই শোকে সোনা আত্মহত্যা করেন। তারপরেই জানা যায়, দিলীপ বেঁচে আছেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।

এদিকে, সোনার আত্মহত্যার খবর পেয়ে হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করেন তার পরিবারের সদস্যরা। সোনার মামা রবীন্দ্র জেনা বলেন, আমার পরিবার ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালের দেয়া এই মিথ্যা তথ্যের জন্য আমার ভাগ্নি আত্মহত্যা করেছে।

অন্যদিকে, জ্যোতিরঞ্জনের পরিবার ভেবেছিল যে তিনি বেঁচে আছেন। তারা জ্যোতিরঞ্জনের শেষকৃত্যও করতে পারেননি। তার স্ত্রী অর্পিতা মুখী বলেন, আমি আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। চিকিৎসার সময় আমি তাকে চিনতে পারিনি কারণ তার গোটা শরীর দগ্ধ ছিল। এই ঘটনায় মৃতের পরিবার হাসপাতালের দিকে আঙ্গুল তুললেও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের সিইও স্মিতা পাধি বলেন, আমরা ভুল করিনি। তারা একটি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিল। আমরা তাদের ভাড়া করেছিলাম। বিস্ফোরণের পরে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়ার সময় তাদের প্রত্যেককে প্রতিষ্ঠানটির একজন ঠিকাদার চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, আহত রোগীদের প্রত্যেকের স্বজনরা তাদের হাসপাতালে দেখেছেন। আমরা সমস্ত আইনি ও চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। পুলিশ যখন মৃতদেহ আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করে তখন পরিবারের কেউ জানায়নি যে মৃতদেহ দিলীপের নয়।