তীব্র শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন

সংগৃহীত

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বুধবার (১০ জানুয়ারি) নওগাঁর বদলগাছীতে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লালমনিরহাটে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ ভিড় করছে পুরনো কাপড়ের দোকানে। পঞ্চগড়ে তিন দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। কুড়িগ্রামে ঠান্ডায় কাবু শ্রমজীবী মানুষ। নীলফামারী ও দিনাজপুরে বিপর্যস্ত জনজীবন।

লালমনিরহাটতীব্র শীত, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়ারা অনেক কষ্টে দিন পার করছে। শীতের প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পুরনো গরম কাপড় বিক্রি। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোয় সারা দিন ভিড় লেগেই থাকছে। বুধবার সকাল ১০টায় লালমনিরহাট জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবলচন্দ্র সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন। 

রিকশাচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঠান্ডায় কম দামে জ্যাকেট কিনেছি।’ পুরনো কাপড় ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে প্রচুর শীত নেমেছে। গরম কাপড়ও বেশি বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে একটি ভালো জ্যাকেট পাওয়া যায়। সোয়েটার ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যায়।’ 

নওগাঁদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বুধবার নওগাঁর বদলগাছীতে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাসে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। 

বদলগাছী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বলেন, ‘ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।’ 

পঞ্চগড়তিন দিন সূর্যের দেখা মেলেনি পঞ্চগড়ে। সারা দিন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো থাকছে সবকিছু। বাতাসের সঙ্গে টিপ টিপ শিশির ঝরছে। জীবনযাপনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। প্রান্তিক মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। রাতে এক-দুটি লেপকম্বল দিয়ে ঠান্ডা মোকাবিলা করা যায় না। তিন-চারটি গরম কাপড়ও পরতে হয়। খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। তাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। ছিন্নমূল মানুষ ভুগছে গরম কাপড়ের সংকটে।

কুড়িগ্রামহাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপাকে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রাতে বৃষ্টির ফোঁটার মতো পড়তে থাকে কুয়াশা। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়েছে। জেলার জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। 

নীলফামারীতীব্র শীত জেঁকে বসেছে। হিমেল হাওয়া বইছে। বিপর্যস্ত জনজীবন। ঘন কুয়াশা ঢেকে রেখেছে চারপাশ। যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে।

দিনাজপুর : শীতের প্রকোপ বেড়েছে। বিকালের পর শুরু হয় হিমেল বাতাস। সন্ধ্যা থেকে ঘন কুয়াশা। সকালে ও রাতে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে দিনাজপুর। কনকনে শীতে কাঁপছে খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করেছে। বুধবার সকাল ৯টায় দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ