গাজায় গণহত্যার অভিযোগ উড়িয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র!

গাজায় গণহত্যার অভিযোগ উড়িয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র!

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের বিরুদ্ধে সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্র গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলি বর্বরতায় একেবারেই নিশ্চুপ। এমনকি চীনের উইঘুরে সুর্নিদিষ্ট তথ্য ছাড়াই গণহত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ তোলা হলেও, গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে একের পর এক প্রশ্ন করা হলেও কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।  

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া, যা এখনো চলছে। অন্যদিকে গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দুই দেশের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইউক্রেনের শক্তির যে ঘাটতি, তা পূরণে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো। বিপরীতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামাসের যে কথিত যুদ্ধ তার মূল্য দিতে হচ্ছে গাজার নিরীহ, নিরপরাধ ও বেসামরিক বাসিন্দাদের। 

এক্ষেত্রে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি সরকার, আরব লিগ বা অন্য কোনো দেশ গাজার বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। উল্টো আগ্রাসী ইসরাইলকে বড় আকারের সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে পরমমিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরের পর বছর রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে সক্ষম ইউক্রেন। কিন্তু গাজার ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগই ক্ষুধার্ত, আহত, অসুস্থ ও নিহত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের দুই প্রান্তের যুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা গণহত্যার শিকার হচ্ছে বলে দাবি জানানো হলেও, গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র। 

এমনকি চীনের উইঘুরে কোনো ধরনের তথ্য ছাড়াই গণহত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ তোলা হলেও, গাজায় চোখের সামনে ইসরাইলি বর্বরতায় নিশ্চুপ বাইডেন প্রশাসন। বিষয়টিকে মানবাধিকারের সবক দেয়া পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বিমুখী নীতির আরেকটি অকাট্য প্রমাণ হিসেবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। 

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বব্যাপী গণহত্যা বন্ধে ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ চুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ২০২২ সাল নাগাদ ১৫২টি সদস্য দেশ এতে সাক্ষর করেছে, যার মধ্যে আছে ইউক্রেন, রাশিয়া, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন। স্বাক্ষরকারী সব দেশ এই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য।