তাইওয়ানের নির্বাচন : চীন বনাম যুক্তরাষ্ট্র

তাইওয়ানের নির্বাচন : চীন বনাম যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা অনেকাংশে নির্ভর করছে চীন এবং তাইওয়ানের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর। তাই ২০২৪ সাল থেকে তাইওয়ান কোন পথে চলবে চীন না যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে এমন প্রশ্নই বারবার ঘুরে ফিরে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল থেকে রাজধানী তাইপেসহ দ্বীপটির বিভিন্ন এলাকায় শত শত ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাইওয়ানের দুই বড় রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিকেকে) এবং কুওমিনটাংয়ের মধ্যে। ডিকেকের পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন তাইওয়ানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। আর বৃহত্তম বিরোধী দল কুওমিনটাংয়ের পক্ষে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির শীর্ষ নেতা হোন-ইউ ইহ। এই দুজন ছাড়াও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের সাবেক মেয়র এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) শীর্ষ নেতা কো ওয়েন জে।

ডিকেকে বরাবরই ব্যাপকভাবে বেইজিংবিরোধী এবং বেইজিংকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় হুমকি বলে প্রচার করে আসছে। দলটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী উইলিয়াম লাইকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ ব্যক্তির তকমা দিয়েছে চীন।

কিন্তু তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুওমিনটাং তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সদ্ভাব রাখার পক্ষে।

তবে সেখানকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচনে ক্ষমতসাীন ডিকেকের জয়ের সম্ভাবনা বেশি। যদি ডিকেকে কাঙ্ক্ষিত জয় পায়, সেক্ষেত্রে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে দলটি। আর চীনের সঙ্গে বৈরিতা নিয়েই দেশ পরিচালনা করতে হবে।

জানা গেছে, শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ভোটারকে ব্যালট পেপার ব্যবহারের মাধ্যমে সব ভোটারকে ভোট দিতে হবে। কোনো ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন রাখেনি তাইওয়ানের নির্বাচন কমিশন। আজই শেষ হবে ভোটগ্রহণ এবং নির্বাচন কমিশন আশা করছে, দ্বীপ ভূখণ্ডটির ১ কোটি ৯৫ লাখ ভোটারের অধিকাংশই ভোট দেবেন। সন্ধ্যার দিকে ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

প্রসঙ্গত, কয়েক দশক ধরে চলা সামরিক আইন ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধ্যায় শেষ করে ১৯৯৬ সালে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রবেশ করে তাইওয়ান।

এদিকে তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বেশ জটিল। একসময় চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তাইওয়ানকে গত ৭ দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। এই ইস্যুতে চীন বরাবর ‘ওয়ান চায়না’ নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি বলেছেন, চীনের মূল ভূখণ্ডে তাইওয়ানের অন্তর্ভুক্তি কেউ ঠেকাতে পারবে না।

অন্যদিকে তাইওয়ান সবসময়ই নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বলে দাবি করে আসছে। তবে এই দাবিকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ।