জাবিতে 'জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১' বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষর

জাবিতে 'জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১' বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষর

সংগৃহীত

'জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১' বাতিল চায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী)। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী পাঁচ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের অংশ হিসেবে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন। অনুষ্ঠানে তারা জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১ বাতিলের প্রেক্ষিতে ৫ দফা দাবি জানায়। এগুলো হলো- ১. প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা পদ্ধতি তুলে দেয়া চলবে না। প্রতি ক্লাসে লিখিত পরীক্ষা চালু করা। পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেয়া চলবে না। ২. নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব কমানো চলবে না। ৩. ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ ইত্যাদি চিহ্নের মাধ্যমে মূল্যায়ন পদ্ধতি বাতিল করা। নম্বরভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা। ধারাবাহিক মূল্যায়নের নামে শিক্ষকদের হাতে মার্কস রাখা যাবে না। ৪. একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পর পর দু'টি পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা। ৫. প্রতি ক্লাসে রেজিস্ট্রেশন ও সনদ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করা।

গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব আহম্মেদ জেনিচের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন৷ তিনি‌ বলেন, 'পৃথিবীর কোথাও কোনো ব্যবস্থার এতো আমূল পরিবর্তন করা হয়নি। পরিবর্তন হয় একটা ধারাবাহিকতার মাধ্যমে। কিন্তু এখানে একদম নতুন একটা মডেল এনে দেশের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ এই কারিকুলামের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে৷'

নতুন শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য 'অসৎ' বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষা ধ্বংসের যে নকশা করা হচ্ছে তা নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন চলছে৷ আমি মনে করি আন্দোলন আরও জোরদার করা উচিত৷ কারণ নতুন এ শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে অসৎ। কারণ এর মাধ্যমে এমন প্রজন্ম তৈরি করা হবে যারা প্রশ্ন করতে পারবে না। তাদের প্রশ্ন করার জায়গা আর রাখা হবে না৷'

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাফিউজ্জামান ফরিদ। তিনি বলেন, আমরা চাই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মনুষ্যত্ব ধ্বংসকারী এমন শিক্ষাক্রম বাতিল হোক৷ শিক্ষা হলো ম্যান-মেকিং ক্যারেক্টার৷ শিক্ষা মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে৷ কিন্তু এ শিক্ষাক্রমে তা নেই৷ নতুন এ শিক্ষাক্রমে মৌলিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি৷ অর্থ্যাৎ তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান ছাড়া একটা স্মার্ট জাতি তৈরি করার সাহস দেখাচ্ছে। এ শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা উপকরণ নিয়ে ব্যবসা বাড়বে, কোচিং-গাইড ব্যবসা শুরু হবে৷ অর্থ্যাৎ শিক্ষার বাণিজ্যিকিকীকরণ তরান্বিত হবে৷'