মণিপুরে ৬ সহকর্মীকে গুলি করে আত্মহত্যা কুকি সৈন্যের

মণিপুরে ৬ সহকর্মীকে গুলি করে আত্মহত্যা কুকি সৈন্যের

সংগৃহীত

ভারতের মণিপুর রাজ্যে আসাম রাইফেলসের এক সৈন্য নিজের ছয় সহকর্মীকে গুলি করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ মণিপুরে। মৃত জওয়ানের গুলিতে জখম ছয় জনকে চূড়াচাঁদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছ।

জানা গেছে, মৃত জওয়ান কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। আসাম রাইফেলসের যে ছয় জওয়ানের ওপরে তিনি হামলা চালিয়েছিলেন, তারা কেউ মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্ত নয়। এমনকি সেই জওয়ানরা মণিপুরের বাইরের। এদিকে মৃত জওয়ান চূড়াচাঁদপুরেরই বাসিন্দা। সম্প্রতি তিনি ডিউটিতে যোগ দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতি কী কারণে তিনি এমনটা ঘটালেন, তার তদন্তে নেমেছে মণিপুর পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতায় জর্জরিত মণিপুর রাজ্য। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে বেশিভাগ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘উগ্রবাদীরা’স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে। পুলিশের ওপর পালটা হামলা চালাচ্ছে কুকি সশস্ত্র উগ্রবাদীরাও।

উল্লেখ্য, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত ২০২৩ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।

এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা।

এদিকে এই জেলা থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক শ' সাধারণ মানুষ। ঘরছাড়া হয়ে শরণার্থী শিবিরে থাকছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস