ইউক্রেন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারলো না মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স

ইউক্রেন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারলো না মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স

ইউক্রেন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারলো না মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স

মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে (এমএসসি) ছেয়ে থাকলো তিনটি বিষয়। নাভালনির মৃত্যু, ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উপর হামলার আশঙ্কা।

প্রথম দিন দুপুরের মধ্যেই গোটা বিশ্ব থেকে এমএসসি-তে যোগ দিতে আসা প্রতিনিধিদের সেলফোনে চলে এলো সাইবেরিয়ার জেলে বন্দি অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর খবর। তারপর এমএসসি-র ৬০তম বৈঠকে অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে থাকলো নাভালনির মৃত্যু এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো। যদিও আয়োজকরা চেষ্টা করেছিলেন, বিশ্বের সামনে যে সঙ্কট এসেছে তার সবগুলো নিয়ে যাতে বেশি আলোচনা হয় তার জন্য।

পুতিন ও ট্রাম্প :
এমএসসি বৈঠকের অলিন্দ এবং আশপাশের ক্যাফেতে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল দুইটি নাম পুতিন এবং ট্রাম্প। সপ্তাহান্তেই পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের শহর দখল করে নিতে পেরেছেন। আর ট্রাম্পের সমর্থকরা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সাহায্যের প্রস্তাব অনুমোদন করেননি। বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

তিনি বলেন, ‘বাইডেন এবং তিনি চেষ্টা করছেন, যাতে ওই প্রস্তাব হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রস্তাব শুধুমাত্র সেনেটেই পাস হয়েছে।’

কমলা হ্যারিস জেলেনস্কিকে বলেন, ‘আপনার দেশের জন্য এবং গোটা বিশ্বের জন্য ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।’ সম্মেলনের মূল বৈঠকের বাইরে জেলেনস্কির সাথে আলাদা করে কথা বলেন হ্যারিস।পরে জেলেনস্কির সাথে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, আমেরিকার স্বার্থেই ইউক্রেনকে সাহায্য করাটা জরুরি।’

মার্কিন অস্ত্র চান জেলেনস্কি :
মার্কিন সেনেটরদের সাথে আলোচনার সময় জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন মার্কিন অস্ত্র ও গোলাবারুদের উপর নির্ভরশীল। তার সেনার আরো কামান, গোলাবারুদ, দূরপাল্লার অস্ত্র, অ্যায়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা চাই।’

কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখন জেলেনস্কির দাবিপূরণ করতে পারবেন কিনা, সেটাই প্রশ্ন। কারণ, হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ রিপাবলিকান নেতা জে ডি ভান্স ওহিও-তে বলেন, ‘ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কোনো স্পষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই।’

ইউরোপকে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে :
ভান্স বলেন, ‘পূর্ব ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং দরকার হলে পূর্ব এশিয়ায় সঙ্ঘাতের জন্য বা কোনো লড়াই হলে অথবা লড়াই বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অত অস্ত্র ও গুলিগোলা সরবরাহ করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।’

মিউনিখে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেন, ‘পুটিনের রাশিয়া যেরকম বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে ইউরোপকে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর উৎপাদন বাড়াতে হবে। ইউক্রেনের জন্য এবং নিজেদের সেনার জন্যও।’

নাভালনির মৃত্যু খবর আসার কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনি বলেন, ‘পুতিন শাস্তি পাবেনই। তিনি আমার পরিবার ও রাশিয়ার যে ক্ষতি করেছেন, তার জন্য তার শাস্তি প্রাপ্য। সেই দিনেরও আর বেশি দেরি নেই।’

এমএসজি-তে সপ্তাহান্তের আলোচনা ও বিতর্কে নাভালনির কথা শুনেই মনে হয়েছে, ইউক্রেনকে সাহায্য ও রাশিয়াকে ঠেকানোর জন্য ইউরোপের সক্রিয় হওয়া নিয়ে তার মনে কোনো দ্বিধা নেই। তিনি নিঃসংশয়ে নিজের মতপ্রকাশ করেছেন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে