শিখ পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘খালিস্তানি’ বলার অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

শিখ পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘খালিস্তানি’ বলার অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

শিখ পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘খালিস্তানি’ বলার অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কর্তব্যরত একজন শিখ ধর্মাবলম্বী সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাকে বিজেপি নেতারা 'খালিস্তানি' বলে ডাকার পর দলটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংকে এভাবে 'অবমাননা' করার প্রতিবাদে কলকাতায় বিজেপির দফতরের সামনে মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, যিনি এই এই মন্তব্যটি করেছেন বলে পুলিশ অভিযোগ করেছে, তাকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।কলকাতায় মুরলীধর সেন লেনের রাজ্য বিজেপির দফতরের বাইরে বিক্ষোভও দেখান শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তাদের মধ্যে একজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা শিখ, খালিস্তানি নই। পাগড়ি পরলেই যদি খালিস্তানি বলা হয় তা হলে তা খুবই দুঃখজনক। পাগড়ি আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার।”

এর আগে মঙ্গলবার বিজেপির নেতা-কর্মীরা রাজ্যের অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি অভিমুখে যেতে গেলে সে সময় পুলিশের বাধা পেলে তাদের মধ্যে বচসা হয়। বিজেপির প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ আরও অনেকে। পুলিশের ক্রমাগত বাধা পেয়ে এক সময় ধর্নায় বসেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।সে সময় খালিস্তানি বলা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে পুলিশ কর্মকর্তা যশপ্রীত সিংকে ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায়। ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার সরাসরি অভিযোগ করেন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই মন্তব্য করেছেন।এদিকে শুভেন্দু অধিকারী ওই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন পুলিশকর্তা সুপ্রতিম সরকারকে। তিনি বলেন, “প্রমাণ দিক। নয়ত আইনি পদক্ষেপ নেব।”

অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ

বিজেপি ধর্ম আর জাতিগত পরিচয় নিয়ে রাজনীতি করছে এই অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একজন পাঞ্জাবি পাগড়ি পরলে তাকে খালিস্তানি বলে দেবে? কত মুসলিম অফিসার আইপিএস, আইএএস, ডব্লিউবিসিএস রয়েছেন। একজন মুসলিম অফিসার দেখলে তাকে পাকিস্তানি বলে দেবে?”

বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপিকে সমস্যায় ফেলতে চাইছে তৃণমূল।এ বিষয়ে বিজেপির নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ধর্মকে কেন্দ্র করে বিভাজনের রাজনীতি তৃণমূল বরাবরই করে এসেছে। কেউ যশপ্রীত সিংকে কিছু বলেননি। এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি টুইট করলেও কোনও ভিডিওতে প্রমাণ করতে পারেননি কেউ খালিস্তানি কথাটা বলেছে।”

বিজেপি দফতরের সামনে শিখ সম্প্রদায়ের ওই জমায়েত স্বতঃস্ফূর্ত নয় বরং ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এমনটাই মনে করেন বিজেপি নেত্রী।

তিনি বলেন, “এই জমায়েত কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ত নয়। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জমায়েতের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা তৃণমূলের যুবসংঠনের অংশ।""আমাদের দল শিখ সম্প্রদায়ের পাশে সব সময় থেকেছে। আমি আসানসোলের মেয়ে, বাবার নিকট বন্ধু শিখ। আমি তো কখনোই এমন কোনও কথা বলব না যাতে শিখ সম্প্রদায় আঘাত পায়”, আরও বলেন তিনি।

ঘটনা পরম্পরা

তৃণমূলের নেতা শেখ শাহজাহান এবং তার সহযোগীদের কথিত অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হওয়া সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির নেতা ও কর্মীরা।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে সন্দেশখালিতে যাওয়ার অনুমতি পেলেও ধামাখালিতে পুলিশ তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ।তাদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। অভিযোগ, সে সময় বিজেপির জমায়েতের মধ্যে থেকে আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংয়ের উদ্দেশ্যে উড়ে আসে ‘খালিস্তানি’ কথাটি।মুহূর্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই অফিসার, যার ভিডিও পরে প্রকাশ্যে আসে।

যশপ্রীত সিংকে বলতে শোনা, “আমি পাগড়ি পরেছি বলে আমাকে খালিস্তানি বলবেন? একজন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে আপনারা খালিস্তানি বলবেন? এটাই আপনাদের সাহস? কেউ পাগড়ি পরলে সে খালিস্তানি হয়ে যায়?”পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ভিডিও প্রকাশ করে বিজেপির তীব্র নিন্দা করেন।

সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, "বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি সংবিধানের সমস্ত লক্ষ্মণরেখা এদিন নির্লজ্জ ভাবে অতিক্রম করেছে। বিজেপির কাছে যে কোনও পাগড়িধারী ব্যক্তিই খালিস্তানি। শিখ ভাই বোনদের এই সম্মানহানির এই চেষ্টার আমি তীব্র নিন্দা করছি।’এরপর তৃণমূলের তরফে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠক করে একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন।

সন্দেশখালিতে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে খালিস্তানি বলা হয়েছে ৷ আমরা আইনি পদক্ষেপ করব ৷ এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা ৷ এটি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার মতো একটি ঘটনা ৷ "শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রমাণ না করতে পারে তা হলে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।”

এরপর মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় শিখ সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ। ক্রমশ তা বাড়তে থাকে। বিজেপি দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি মুনি লাল শিখ সঙ্গত গুরদোয়ারা থেকে বিজেপির কার্যালয় যেখানে, সেই মুরলীধর সেন লেন পর্যন্ত একটি মিছিলও হয়েছে।এদিকে বিজেপিকে তোপ দেগেছে রাজ্য ও জাতীয় স্তরের বিরোধী দলগুলিও।

বিজেপির বক্তব্য

বিজেপির বিরুদ্ধে তোলা এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দলের এমএলএ অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “২০ ফেব্রুয়ারি সেখানে আমি, তিনজন এমএলএ তাপসী মন্ডল, সুমিতা সিংহ, শঙ্কর ঘোষ, বিরোধী দলনেতা, বিজেপি কর্মকর্তারা ছিলেন, সংবাদমাধ্যমের বহু প্রতিনিধি ছিলেন।""আমরা ভেবেছিলাম আদালতের আদেশ যখন আছে, তখন আমরা সন্দেশখালিতে যেতে পারব। অন্তত বিরোধী দলনেতা এবং শঙ্কর ঘোষ যাওয়ার অনুমতি পাবেন, কারণ সন্দেশখালিতে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে আদালতে দায়ের করা মামলায় কিন্তু পিটিশনার তারাই।”

“যশপ্রীত সিং-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকেরা আমাদের বাধা দেন। আমাদের জানানো হয় রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে। তার রায় না আসা পর্যন্ত আমাদের যেতে দেওয়া হবে না। এরপর আমরা সেখানেই ধর্নায় বসি।”কিছুক্ষণের মধ্যেই ডিভিশন বেঞ্চের রায় বিজেপির পক্ষে আসে।“পুলিশি নিরাপত্তার মাঝে দুই পিটিশনারকে সন্দেশখালিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা আবার পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে যাই। এর স্বপক্ষে শুভেন্দুদার আইনজীবীর চিঠিও পুলিশকে দেখানো হয়।"

"কিন্তু যশপ্রীত সিং বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি না মেলা পর্যন্ত আমাদের যেতে দেওয়া হবে না। আমরা বুঝতে পারি, উপরতলা থেকে অনুমতি না দিলে আমাদের যেতে দেওয়া হবে না,” বলেন অগ্নিমিত্রা।তার দাবি, পুলিশ আধিকারিক কেন তাদের বিরুদ্ধে ওই বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ তুলছেন সে বিষয়টা স্পষ্ট নয়।বিজেপি নেত্রীর কথায়, “আমরা সবে মাত্র উল্টোদিকে ঘুরেছি, অমনি ওই পুলিশ আধিকারিক চিৎকার করে বলেন- আমাকে কেন খালিস্তানি বললেন?”

“আমি বললাম, আপনাকে কেউ কিছু বলেননি। আপনি নিজের দায়িত্ব পালন করুন। আপনি নিজের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করছেন না এই বলে আমরা সব নারী কর্মীরা চিৎকার করে বলছিলাম। যেহেতু আমার গলার জোর বেশি তাই অন্যদের আওয়াজ ছাপিয়ে আপনি ওই ভিডিওতে আমার গলা পাবেন।”“আমরা বলেছি আপনি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছেন। এরপর বচসা হয়। এরপর ওই আধিকারিকও কোনও কথা বলেননি। আমরাও বলিনি।”কিছুক্ষণের মধ্যে এক নারী পুলিশ আধিকারিক এসে বিজেপি কর্তাদের জানান পিটিশনাররা আদালতের রায় মেনে সন্দেশখালিতে যেতে পারবেন।

“এরপর মিনিট দশেকের মধ্যে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাত-সহ আরও দশজনকে আমরা সন্দেশখালি যেতে দেখলাম ওই পথ দিয়ে। তাদের কিন্তু বাধা দেওয়া হয়নি।”অগ্নিমিত্রা পাল জানিয়েছেন, তার সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকের বচসার অংশটির ভিডিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট করেন। তাতে আপনি অন্য নারী কর্মীর পাশাপাশি আমার গলা পাবেন। কিন্তু খালিস্তানি শব্দটা কিন্তু বলা হয়নি।”

মুহূর্তে ‘রটে’ যায় অগ্নিমিত্রা পাল ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। “আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমি পাল্টা টুইট করে তাকে চ্যালেঞ্জ জানাই। বলি প্রমাণ দেওয়া হোক। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও মুখ্যমন্ত্রী কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি।”একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপি নেত্রী ও আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রিওয়ালএর গলায়। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “একেবারে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগ এটা। তৃণমূল কিন্তু এখনও এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। কারণ এমন কোনও ঘটনা ঘটেইনি।”

সন্দেশখালির ঘটনা থেকে নজর সরাতেই যে এই বিতর্ক এমনটাও দাবি করেছেন অগ্নিমিত্রা পাল। তার কথায়, “ভোট আসছে, নতুন ইস্যু চাই। আর সন্দেশখালি থেকেও নজর সরাতে হবে সবার। তাই এই অভিযোগ।”তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সেই দাবি শুনতে নারাজ। ওই মন্তব্যকে ঘিরে হওয়া বিতর্ক জাতীয় স্তরে পৌঁছেছে।কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী এক্স মাধ্যমে লিখেছেন, "বিজেপি তাদের রাজনীতির বাজার সাজাতে যে বিদ্বেষের চাষ করছে তা সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে।"

অস্বস্তিতে বিজেপি?

আসন্ন লোকসভা ভোটএর কথা মাথায় রেখে এই বিতর্ক কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপিকে।দিল্লির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি সাংসদ এবং সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘যিনিই বলে থাকুন, অন্যায় করেছেন। তবে রাজ্য বিজেপি জানিয়ে দিয়েছে যে, দলের নেতারা কেউ ওই মন্তব্য করেননি।”

ওন্যদিকে, বিজেপির শাজিয়া ইলমিও প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “কোনও একজন বিক্ষুব্ধ প্রদর্শনকারীর মন্তব্য দলের হতে পারে না। যে কোনও ব্যক্তির এ জাতীয় মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।” তবে তিনি এটাও জানান তার ওই মন্তব্য একেবারে ব্যক্তিগত এবং কোনও ভাবেই বিজেপির বিবৃতি নয়।তবে একই সঙ্গে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগতে ছাড়েননি। “একই সঙ্গে ধর্ষণ এবং অত্যাচারের ঘটনা, অভিযুক্ত শাহজাহান শেখ এখনও পলাতক-এগুলো কিন্তু খুবই গুরুতর বিষয়। গরিব মানুষদের গুণ্ডাদের হাত থেকে রক্ষা করতে অক্ষম হওয়ার জন্য আদালত কিন্তু রাজ্য সরকারকে তিরস্কারও করেছে।”

বিরোধীরা কী বলছে?

এদিকে এই মন্তব্য ‘ধর্মীয় ভাবাবেগকে’ আঘাত করেছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল।

আম আদমি পার্টির নে্তা এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘এক জন শিখ আইপিএস অফিসারকে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব দেশদ্রোহী বলেছেন, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিজেপি সম্ভবত জানে না যে, আজ পর্যন্ত পঞ্জাবিরা দেশকে স্বাধীন করতে এবং স্বাধীনতা রক্ষা করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। বিজেপির উচিত শিখদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।”

আপ নেতা ও দিল্লির মন্ত্রী গোপাল রাইও একই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা কর্তব্যরত এক জন আইপিএস অফিসারকে যে ভাবে খলিস্তানি বলে অপমান করেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। যাঁরা দেশের ঐক্যে বিশ্বাসী তাঁরা জানেন যে, দেশকে শক্তিশালী করতে জাতি, ধর্ম, অঞ্চল বা ভাষার ভিত্তিতে কাউকে অপমান করা উচিত নয়। বিজেপি নেতাদের কথার মধ্যে কত যে ঘৃণা রয়েছে তা প্রকাশ্যে এসেছে। সংবিধানের সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে বিজেপি।’’কংগ্রেসের দাবি, এ রাজ্যে পুলিশের কাজ সমালোচনাযোগ্য হলেও বিজেপির মন্তব্য নিন্দার যোগ্য।প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা এক জন পুলিশ অফিসারকে খালিস্তানি বলেছেন। তাকে অপমান করেছেন। আমি এর নিন্দা করছি।"

"বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন নয় বিজেপি। আমরাও সন্দেশখালি যেতে চেয়েছিলাম। আমাদেরও থামানো হয়েছিল। তার মানে এই নয় যে কর্তব্যরত কোনও অফিসারকে তাঁর ধর্ম নিয়ে অপমান করতে হবে।”সিপিএম-এর বর্ষীয়ান নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য একে রাজনৈতিক মুল্যবোধের অধঃপতন হিসেবেই দেখছেন। তার কথায়, “রাজনৈতিক মুল্যবোধ যে তলানিতে ঠেকেছে সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। বিজেপি, তৃণমূল দুইই অবশ্য সমান।”

সূত্র : বিবিসি