গাজায় অস্ত্রবিরতি : বন্দী বিনিময়ের যে সমীকারণ রয়েছে মার্কিন প্রস্তাবে

গাজায় অস্ত্রবিরতি : বন্দী বিনিময়ের যে সমীকারণ রয়েছে মার্কিন প্রস্তাবে

সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির নানামুখী আলোচনা এখন চলছে। আসন্ন রোজার আগেই যাতে একটি চুক্তি হয়, সেজন্য সবপক্ষই চেষ্টা চালাচ্ছে। চুক্তিতে দুটি প্রধান বিষয় থাকবে। একটি হলো যুদ্ধবিরতি। আরেকটি হলো বন্দী বিনিময়। এছাড়া গাজার পুনর্গঠন, ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার, বর্ধিত হারে ত্রাণ সহায়তা প্রদান, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজনদের তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দেয়ার সুযোগের বিষয়গুলোও রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যকার বিরোধের অন্যতম একটি বিষয় হলো বন্দী মুক্তির হার এবং কাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, প্যারিস আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে হামাসের হাতে থাকা ৪০ বন্দীর বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিষয়টি রয়েছে। এ সময় ছয় সপ্তাহের অস্ত্রবিরতি থাকবে।

এতে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের অস্ত্রবিরতির সময় শেষ দিনে সাত ইসরাইলি নারীর মুক্তির বিনিময়ে ২১ ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীর মুক্তির কথা ছিল। এখানে বিনিময় হার ছিল ৩:১। গতবার যুদ্ধবিরতি ভণ্ডুল হয়ে গেলে তা সম্পন্ন হতে পারেনি। এবার তা সম্পন্ন হবে।

এরপর ৯০ ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরাইল। বিনিময়ে হামাস ৫ ইসরাইলি নারী সৈন্যকে মুক্তি দেবে। এখানে বিনিময় হার হবে ১৮:১। ইসরাইল এখানে যে ৯০ জনকে মুক্তি দেবে, তার মধ্যে ১৫ জন হবে গুরুত্বপূর্ণ অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত। বেশ কয়েকটি গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এরপর ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে হামাসের হাতে থাকা ৫০ বছরের বেশি বয়সী ১৫ পুরুষকে মুক্তির বিনিময়ে।

তারপর ১৫৬ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে ১৩ জন ইসরাইলি পুরুষ বন্দীকে মুক্তির বিনিময়ে। এসব ইসরাইলি পুরুষ অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত। এখানে অনুপাত হবে ১২:১।

সবশেষে আরো ৪০ ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এদেরকে অপহৃত ইসরাইলি সৈন্য গিলাদ শালিতের মুক্তির বিনিময়ে ২০১১ সালে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। তবে ইসরাইল তাদেরকে আবার গ্রেফতার করেছিল।

এক খবরে বলা হয়েছে, প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবে ইসরাইল, মিসর ও কাতার একমত হয়েছিল।

এ ব্যাপারে হামাসের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এপির এক খবরে বলা হয়েছে, মিসরের এক প্রস্তাবে উত্তর গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত লোকজনকে তাদের বাড়িঘরে ফেরার কথা বলা হয়েছে। মিসরীয় প্রস্তাবে গাজায় দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে করার কথাও বলা হয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, ইসরাইল তার সকল নারী সৈন্য মুক্তির ওপর চাপ দিচ্ছে। এসব সৈন্যের মুক্তির জন্য ইসরাইলিরা নেতানিয়াহুর ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু হামাস এ ব্যাপারে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। তারা মনে করছে, এসব সৈন্যকে মুক্তি দিয়ে ইসরাইল আরো বেপরোয়াভাবে হামলা চালাবে।


আলোচনায় ইসরাইলের একটি প্রস্তাব ছিল এমন যে যেসব এলাকা থেকে তারা সৈন্য প্রত্যাহার করবে, সেখানে হামাস সদস্যরা যেতে পারবে না। এছাড়া হামাস গাজা থেকে ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপ করতে পারবে না। হামাস উভয় দাবিই প্রত্যাখ্যান করেছে। মঙ্গলবারও দক্ষিণ ইসরাইলের রকেট নিক্ষেপের হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেয়া হয়েছিল।