কলকাতার বাজারেও খেজুরের দাম চড়া

কলকাতার বাজারেও খেজুরের দাম চড়া

ফাইল ছবি।

বিশ্বব্যাপী পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এই মাস অত্যন্ত পবিত্র। এই মাসে রোজা ও ইফতার একে অপরের পরিপূরক। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সারাদিন না খেয়ে রোজা রাখেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রোজা এবং ইফতারের সঙ্গে সবচেয়ে পরিচিত একটি নাম হচ্ছে খেজুর। ইফতারে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি খেজুর থাকবেই। খেজুর ছাড়া যেন ইফতার পরিপূর্ণ মনে হয় না।

কলকাতায় খেজুরের পাশাপাশি শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটসের চাহিদাও প্রচুর। খেজুর, কাজু বাদাম, কিসমিস, চেরিসহ বেশ কিছু শুকনো ফলের সমন্বয়ে ড্রাই ফ্রুটস সাজানো হয়। রমজান মাসে কলকাতার বাজারে দেশ-বিদেশের খেজুর পাওয়া যায়। কিছু খেজুর পাওয়া যায় প্যাকেট বন্দি অবস্থায় আবার খোলা ভাবেও বিভিন্ন ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। তবে খোলা খেজুরের চাহিদাই বেশি থাকে।

তবে চাহিদা থাকলেও এবারের রমজানে বিক্রি-বাট্টা বিশেষ নেই বলে জানিয়েছেন কলকাতার খেজুর বিক্রেতারা।

শিয়ালদহ বৈঠকখানা বাজারের পাইকারি খেজুর বিক্রেতা রাজেন্দ্র সাউ বলেন, খুচরা খেজুর প্রতি কেজি ৯০ রুপি।আর পাইকারি এক পাল্লা (৫ কেজি) নিলে ৪০০ রুপি। রমজান বলে দাম একটু বেশি।

অপর এক পাইকারি খেজুর বিক্রেতা মনিন্দ্র কুমার যাদবের মতে, রমজান বলে খেজুর আগের তুলনায় প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ রুপি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মনিন্দ্র কুমার যাদব বলেন, যে খেজুর আগে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ রুপিতে বিক্রি হতো সেই খেজুর এখন ৯০ থেকে ৯৫ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

 খুচরা বিক্রেতা সাহেব গাজি বলেন, রমজান বলে খেজুরের দাম বেড়ে গেছে। আগে ৭০ থেকে ৮০ রুপিতে বিক্রি হতো। সেই খেজুর ১০০ থেকে ১২০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাহারি প্যাকেট মোড়া গাঢ় বাদামী রঙের খেজুর আরব মুলুক থেকে জাহাজে করে পৌঁছেছে কলকাতার মার্কেটে। এসব খেজুর কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই খেজুর প্রতি প্যাকেট ২৫০ থেকে ৩৫০ রুপি আবার কোথাও ৪০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

এর পাশাপাশি কাজু বাদামের দামও চড়া। ভালো কাজু বাদাম প্রতি কেজি ৮০০ রুপি। কোথাও আবার ৭০০ রুপি আবার কোথাও ৬৫০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কিসমিস ২৫০ থেকে ৩০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে রমজানের শুরু থেকে বাংলাদেশেও খেজুরের দামে আগুন লেগেছে। প্রতি বছরই রোজায় খেজুরের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবারের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সাধারণ মানের বিভিন্ন জাতের খেজুরও সাধারণ মানুষের অনেকটা নাগালের বাইরে। বাজারে অন্য নিত্যপণ্যের দামে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষের কাছে ইফতারিতে খেজুর হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসী পণ্য।

এবছর পাইকারিতে পাঁচ কেজি মরিয়ম খেজুর মানভেদে চার হাজার ৩শ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ২ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা। কালমি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়, যা বিগত বছর ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি পাঁচ কেজি আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২৬শ থেকে সর্বোচ্চ ৩২শ টাকা। এবছর মাবরুম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ থেকে চার হাজার ৫শ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২২শ থেকে শুরু করে ৩২শ টাকা। গত বছর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া মেডজুল এবার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকায়। বিগত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি খেজুরের দাম বেড়েছে ২শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত।