পুঁজিবাজারের মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ডিবিএর ৭ প্রস্তাব

পুঁজিবাজারের মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ডিবিএর ৭ প্রস্তাব

ফাইল ছবি

দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো। এর প্রতিফলন শিগগির পুঁজিবাজারে পড়বে বলে মনে করে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পুঁজিবাজারে বিদ্যমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে সাম্প্রতিক পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শীর্ষ ৩০ ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়কালে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।

আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের অভিমত তুলে ধরেন। তারা মনে করেন, বাজার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ নেই। তবে, কারো কারো মতে, শেয়ার দরের ওপর থেকে ফ্লোর তুলে নিলে এমনিতেই কিছুটা প্রাইস এডজাস্টমেন্ট হয়ে থাকে। এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক। খুব শিগগির বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে বলে ইঙ্গিত করেছেন শীর্ষ এই ব্রোকার প্রতিনিধিরা।

তবে, আগামী দিনে বাজারের সার্বিক স্বার্থে প্রতিনিধিরা বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন, যা বাস্তবায়ন হলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল ও টেকসই হবে।

ডিবিএর আলোচনা সভায় উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো-
১. শেয়ারের দরে পুনরায় ফ্লোর আরোপ করা হতে পারে বলে বাজারে যে গুজবটি রয়েছে, তা শতভাগ গুজব, মিথ্যা, ভিত্তিহীন। ফ্লোর প্রাইসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলে ডিবিএ মনে করে।

২. বর্তমান মর্জিন বিধিমালা-১৯৯৯ এর যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে।
৩. ভালো কোম্পানির আইপিও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে। কোম্পানি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন ও বিধি-বিধানের সঠিক পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
৪. বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর জোর দিতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
৫. কোম্পানির ক্যাটাগরি ডিভিডেন্ডের ওপর না করে এর ক্যাপিটাল সাইজের ওপর করাই যৌক্তিক।
৬. সাধারণ শেয়ারহোল্ডার, স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার কিংবা অন্য কোনো শেয়ারহোল্ডারদের না জানিয়ে ভিন্ন কোনো উপায়ে শেয়ার বৃদ্ধি করা বন্ধ করতে হবে।
৭. দ্বৈত করের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তা সমাধান করতে হবে।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী শীর্ষ ব্রোকারেজ কোম্পানিগুলো হলো—লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, সিটি ব্রোকারেজ, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ, শান্তা সিকিউরিটিজ, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ, ইবিএল সিকিউরিটিজ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি, এমটিবি সিকিউরিটিজ, আইসিবি সিকউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, রয়েল ক্যাপিটাল, প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এনআরিবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেড, গ্লোব সিকিউরিটিজ, এবি সিকিউরিটিজ, কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফার্স ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ, এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, মিকা সিকিউরিটিজ, আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—ডিএসইর পরিচালক শরীফ আনোয়ার হোসেন ও রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদ রশীদ লালী, বিএলআই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, বেক্সিমকো সিকিউরিটিজের সিইও মোস্তফা জামানুল বাহার প্রমুখ।