পড়ন্ত বয়সের নারীদের রক্তস্রাব
ফাইল ছবি
অধ্যাপক ডা. শামছুন নাহার
আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা
পড়ন্ত বয়সে রক্তস্রাব বা মেনোপজের সময় রক্তস্রাব কখন বলা হয় ?
কোন নারীর স্থায়ীভাবে কমপক্ষে এক বছরের বেশি সময় মাসিক বন্ধ থাকে ওভারির ফলিকুল শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তখন সেই সময়কে মেনোপজ বলা হয়। যদিও এটা ৫/৭ বছর আগে আগে থেকে শুরু হয়ে যায় তার কার্যক্রম। মেনোপজ সাধারণত ন্যাচারালভাবে হতে পারে অথবা সার্জিক্যাল মেনোপজ যেটা অপারেশনের কারণে যদি দুটো ডিম্বাশয় কেটে ফেলা হয়। এইসময় যে রক্তস্রাব হয় তাকে মেনোপজ পরবর্ী রক্তস্রাব বলা হয়। এই রক্তস্রাব অনাকাঙ্খিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়।
কি কি কারনে এই রক্তস্রোত হতে পারে ?
এটা নারীদের শেষ বয়সের দিকে হয়। তাই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যেমন, জরায়ু ভেতরের অংশে ক্যান্সার যার নাম এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার । জরায়ু মুখে ক্যান্সার বা সারভাইক্যাল ক্যান্সার। স্নেনাইল ভেজাইনাটিস, শ্নেনাইল এনডো মেট্রাইটিস বা বয়স্ক জনিত প্রদাহ । পায়োমেট্রা জরায়ুর ভেতর পুঁজ জমে থাকা। পলিপ এলোমেলো ভাবে হরমোন জাতীয় অসুধ নেয়া । আরো অনেক বিবিধ কারণ থাকে।
এই পড়ন্ত বয়সের রক্তস্রোত ঝুঁকি পূর্ণ। তাই সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সর্বপ্রথম কারণ নির্ণয় বা রোগ শনাক্ত করাই প্রথম এবং প্রধান কাজ।
কি পরীক্ষা করা যায় ?
আলট্রা সোনোগ্রাম তলপেটের। ভাল হয় ভেজাইনাল রুটে করা। জরায়ুর ভেতর থেকে টিসু নিয়ে পরিক্ষা করা বা এনডো মেট্রিয়াল বায়োপসি বলে। হিসট্রাস্কোপি সরাসরি জরায়ুর ভেতর অংশ দেখা, কোন পলিপ বা অন্য কোন ক্ষত এমন কি ক্যান্সার অথবা ভুলে যাওয়া কপারটি। আরো নানা বিষয়ে রক্ত যেতে পারে। রোগ শনাক্ত হওয়ার পর. রোগীর অপারেশন লাগলে তাকে ফিট করা। যেমন আরো সম্পূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা রোগীর রক্ত শুন্যতা থাকলে রক্ত দেয়া।
চিকিৎসা?
কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। বার্ধক্য জনিত কারণে স্নেনাইল এনডো মেট্রাইটিস এসব ক্ষেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা, এস্ট্রোজেন থেরাপি সাথে একটি এ্যানটিবায়োটিক। ন্যাচারাল এস্ট্রোজেন অল্প কিছুদিনের জন্য দিতে হবে। অনেকদিন দিলে জরায়ুর এনডো মেট্রিয়াম এ ক্যান্সার হতে পারে।
ক্যানসারের জন্য যদি রক্তস্রাব হয়। সে ক্ষেত্রে সার্জারী প্রথমে পরে কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপি দেয়া যেতে পারে।
যদিও রক্তস্রোত এসব বয়েসের জন্য বেশি ক্ষতি ও ঝুঁকিপুর্ণ তাই এসব বয়েসের নারীদের রক্তস্রাব হলে সংকোচ বা অমোনযোগী না হয়ে ততক্ষনাৎ চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয় প্রয়োজন। তাই রোগীরাও যেন বাড়িতে বসে না থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হতে পারে নিজেদের ভালোর জন্য।