পাবনায় ঢিলেঢালা জীবনযাপনে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

পাবনায় ঢিলেঢালা জীবনযাপনে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

ফাইল ছবি।

পাবনায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘন্টায়  জেলায় নতুন করে আরো ৩৩ জন করোনায়( কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে  জেলায়  মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৫৪। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা গণনা মৃত্যুর সংখ্যা ১৬। 

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে আট মাসের বেশি সময় ধরে বিশ্ব টালমাটাল। আর পাবনার মানুষ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে। মার্চের ২৪ তারিখ থেকে অদৃশ্য এ সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের অন্যান্য জেলার মত পাবনা জেলাতেও অঘোষিত লকডাউন, সাধারণ ছুটি, জনচলাচলে সীমাবদ্ধতা  তৈরিসহ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।

জীবিকার তাগিদে ও করোনার কারণে সৃষ্ট সার্বিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থাকে গতিশীল করতে সরকার ধাপে ধাপে জনজীবনকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করতে হবে। কিন্তু পাবনার অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে উদাসীন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে ন্যূনতম মাস্কও ব্যবহার করতে চাচ্ছেন না তারা। সামাজিক দূরত্ব মানারও বালাই নেই।

পাবনার সার্বিক জীবনযাত্রার চিত্র দেখলে করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি যে আছে বলে মনেই হয় না। মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের ভয়ভীতি নেই। এভাবে ঢিলেঢালা জীবনযাপনে বাড়ছে সংক্রমণ। গত সপ্তাহে পাবনায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ১ জন কলেজ শিক্ষকসহ এক এনজিও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য যেসব কর্তৃপক্ষ আছে তারাও সঠিকভাবে মনিটরিং করছেন না বলে অভিযোগ করছে সচেতন জনসাধারণ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ পরিস্থিতিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, করোনাকে অবহেলা করার সময় এখনো আসেনি। এখনো বিপজ্জনক অবস্থায় আছি। সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখনই নিশ্চিত করা গেলে বিপদ থেকে আমরা রক্ষা পাব। এক্ষেত্রে ঢিলেঢালা ভাব দেখানোর কারণে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। 

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে পাবনাতে বেড়েছে জনসমাগম। পাবনা শহরে শুরু হয়েছে সেই চিরচেনা যানজট। ফুটপাত থেকে অভিজাত শপিংমল, বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্রে এখন মানুষের সরব উপস্থিতি। কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। পাবনায় গণপরিবহনও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হচ্ছে না। পাবনার ফুটপাত গুলোতে ভাসমান চা-সিগারেটের দোকান বসেছে। এসব দোকানে উপচে পড়া ভিড়। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। যেন পুরোনো চেহারায় ফিরেছে পাবনা। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে মাছের বাজারে পা ফেলাই দায়। অধিকাংশ দোকানির মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক নেই ক্রেতাদের মুখেও।

এদিকে প্রায় ১ মাস ধরে পাবনা সিভিল সার্জন অফিস থেকে করোনা বিষয়ে গণমাধ্যমে কোন তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে ঢিলেঢালা জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে পাবনাবাসী। এতে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুকি।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানিয়েছেন,“গত ২৪ ঘন্টায় পাবনায় নতুন আরো ৩৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৫৪। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৮শ’ ২৬ জন করোনামুক্ত হয়েছেন।” 
এছাড়া বিভিন্ন ও পারিবারিক সূত্র মতে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা জেলায় গেছেন ১৬ জন।