নফল রোজার প্রভাব ও প্রতিদান

নফল রোজার প্রভাব ও প্রতিদান

প্রতিকী ছবি

আমরা প্রতিদিন নামাজের আগে ও পরে কিছু সুন্নত নামাজ আদায় করে থাকি। তেমনি আমাদের রমজানের পরও কিছু রোজার বিধান আছে, যেসব রোজা রমজানের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে থাকে। নফল রোজায় পারলৌকিক প্রতিদানের পাশাপাশি আছে স্বাস্থ্যগত প্রভাব। নিম্নে কিছু নফল রোজা নিয়ে আলোচনা করব।

শাওয়ালের ছয় রোজা

রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি মাসে কয়েক দিন রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-কেও উদ্বুদ্ধ করতেন। তবে তিনি রমজানের পরের মাস শাওয়ালে ছয়টি রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা পালন করল, তারপর শাওয়াল মাসে ছয় দিনকে তার অনুগামী করল (অর্থাৎ ছয়টি রোজা পালন করল), সে যেন সারা বছর রোজা রাখল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬২৯)
সোমবার বৃহস্পতিবারের রোজা

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল পেশ করা হয়।

সুতরাং আমি ভালোবাসি রোজাদার অবস্থায় যেন আমার আমল পেশ করা হয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪৭ )
আইয়ামে বিজের রোজা

আইয়ামে বিজের রোজা বা প্রতি মাসে তিনটি রোজা। প্রতি হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে ‘আইয়ামে বিজ’ বলা হয়। এই দিনগুলোতে চাঁদ তার কিরণে পূর্ণতা লাভ করে।

আর এই ভরা পূর্ণিমার রাতে মানুষের মনে এক ধরনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শয়তান সে সময়ে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেওয়ার বেশি চেষ্টা করি। তাই এ সময় রোজা রেখে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রবৃত্তিকে দমানো সম্ভব হয়। আবু জর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেছিলেন, হে আবু জর! প্রতি মাসে যদি তিন দিন রোজা পালন করতে চাও তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা পালন করো।
(জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৬১)

আশুরার রোজা

রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে মহরম মাসের দশম তারিখ এই রোজা ফরজ ছিল।

তাই আশুরার রোজা রাখার চেষ্টা করা। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর আশুরার রোজা ফরজ বিধান হিসেবে বাকি থাকেনি। আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, আশুরা দিবসের রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর নিকট আশা করি যে এর মাধ্যমে তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহর) কাফফারা করে দেবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫২)
জিলহজ মাসের রোজা

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বছরের শ্রেষ্ঠতম দিন। মহান আল্লাহ তাআলা এই দিনগুলোর গুরুত্ব বোঝানোর জন্য হাফসা (রা.) বলেন, চারটি বিষয় এমন যেগুলোকে নবী (সা.) কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের রোজা এবং ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৫)

বিশেষত, জিলহজ মাসের নবম তারিখ রোজা রাখা আরো গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরাফা দিবসের সিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী বছর এবং পরবর্তী বছরের গুনাহ কাফফারা (মাফ) করে দেবেন। (তাহাবি শরিফ, হাদিস : ৩২৬১)