প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরছেন আজ

প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরছেন আজ

ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে আজ দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্র জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোমবার সকালে (স্থানীয় সময়) ব্যাংকক ত্যাগের কথা রয়েছে।’

শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উভয় সফরের অংশ হিসেবে ২৪ এপ্রিল বিকেলে সেখানে পৌঁছান।

শেখ হাসিনা ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়া হয়। সেখানে তাকে ১৯বার তোপধ্বনী ও গার্ড অব অনার দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী এই সফরকে ‘প্রতিবেশী’ নীতির ওপর বৃহত্তর ফোকাসের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

কারণ, এটি দুই দেশের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিকে আরও নবায়নের চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

থাই প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ সভায় শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা যোগাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি এই সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আগামীতেও সম্পর্কের নবায়নের এই গতিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

সফর চলাকালিন ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় নেতার উপস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি সই হয়।

নথিগুলো হলো: একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি অভিপ্রায় পত্র। নথির মধ্যে সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা, শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা এবং পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত অভিপ্রায় পত্রও রয়েছে।

শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেন। গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে লাল গালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

শেখ হাসিনা ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন। এই অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি সকল বিশ্বনেতাকে যুদ্ধ, আক্রমণ এবং আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহবান জানান। তিনি বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা।

তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিরসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সংলাপ শান্তি আনতে পারে।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা ও ইউএনএসক্যাপ সম্মেলনস্থলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাওচা-উয়ুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।