হজে কোন আমল বেশি করা ভালো

হজে কোন আমল বেশি করা ভালো

ছবি: সংগৃহীত

হজের সফরে বা হারাম শরিফে গিয়ে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আমল কোনটি—জানতে চান অনেকে। এর উত্তরে প্রথম কথা হলো- যখন যে আমলটি করা সুন্নাহ, তখন সে আমলটি করতে হবে। এরপর কাবাঘরের তাওয়াফই হচ্ছে হারাম শরিফে থাকাবস্থায় সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ আমল। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। 

পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে মহান আল্লাহ এই পবিত্র ঘরের তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন—সুরা হজের একটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং তাদের মানত পূর্ণ করে ও তাওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের।’ (সুরা হজ: ২৯)

এখানে প্রাচীন ঘর বলতে পবিত্র কাবাঘরের কথা বলা হয়েছে। কাবাঘরের তাওয়াফ এতটাই ফজিলতপূর্ণ ইবাদত যে, এর তাওয়াফকে সেখানে নামাজের ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে কোরআনে। ইরশাদ হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে তোমারা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সুরা বাকারা: ১২৫)

এই আয়াতে মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম তাওয়াফকারীদের কথা উল্লেখ করেছেন। একইভাবে সুরা হজেও মহান আল্লাহ তাওয়াফকারীদের কথা সর্বপ্রথম উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমার ঘরকে পবিত্র রাখবে তাওয়াফকারী, নামাজ কায়েমকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য।’ (সুরা হজ: ২৬)

এসব আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, পবিত্র কাবাঘরের তাওয়াফ করা নফল নামাজের চেয়েও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কাবাঘরের তাওয়াফ ছাড়া হজ-ওমরাও শুদ্ধ হয় না। 

তবে কেউ যদি নফল তাওয়াফ করতে চান তখন তাকে লক্ষ রাখতে হবে, যারা ফরজ-ওয়াজিব তাওয়াফ করছেন তাদের যেন কষ্টের কারণ না হয়, নফল তাওয়াফের কারণে ভিড় না বেড়ে যায়।

পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ হজ ও ওমরার জন্য ফরজ কাজ। হজ ও ওমরাকে সঠিক ও পরিপূর্ণ করতে হলে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করা আবশ্যক। তাওয়াফের পদ্ধতি রয়েছে।

সঠিকভাবে পবিত্র বায়তুল্লাহর তাওয়াফে ক্রীতদাস মুক্ত করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করল এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ল, তা একটি ক্রীতদাসকে দাসত্বমুক্ত করার সমতুল্য।’ (ইবনে মাজাহ: ২৯৫৬)

হাদিসে আরও এসেছে, যখনই কোনো ব্যক্তি তাওয়াফ করতে গিয়ে এক পা রাখে এবং অপর পা তোলে আল্লাহ তখন তার একটি করে গুনাহ মাফ করে দেন এবং একটি করে সওয়াব লিখে দেন। (তিরমিজি: ৯৫৯)

তাই মহান আল্লাহ যাদের বায়তুল্লাহর মেহমান হিসেবে কবুল করেন, তাদের উচিত যত বেশি বেশি সম্ভব তাওয়াফের মাধ্যমে এই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার চেষ্টা করা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বারবার পবিত্র মক্কা-মদিনা জিয়ারতের তাওফিক দান করুন। কাবাঘর তাওয়াফের তাওফিক দান করুন। আমিন।