নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের

নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের

ছবি:সংগৃহীত

নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় পৃথক মামলা দায়ের করেছে নির্যাতিতা ওই নারী। রোববার রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও অপরটি আইসিটি আইনে নয়জনকে আসামি করে মামলা দুটি দায়ের করেন তিনি।

মামলায় ওই এলাকার মধ্যম একলাস পুরের রহমত উল্যার ছেলে বাদল (২২), জয়কৃষ্ণ পুরের শেখ আহমদের ছেলে রহিম (২০), খালপাড় এলাকার জুলফিকার আলীর ছেলে আবদুল কালাম (২২) মধ্যম একলাশ পুরের আমিন উল্যার ছেলে ইস্রাফিল হোসেন (২০), পূর্ব একলাস পুরের লোকমান মিয়ার ছেলে সাজু (২১), একই গ্রামের নেয়ামত উল্যার ছেলে শামছুদ্দিন সুমন (৩৯), খালপাড়ের আবদুল জলিলের ছেলে আবদুর রব ওরফে চৌধুরী (৪৮), একই গ্রামের মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে আরিফ (১৮) ও একই গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে রহমত উল্যা (৪১)।

মামলার এজহারে ওই গৃহবধূ উল্লেখ করেন, ঘটনার রাতে অভিযুক্তরা তার ঘরের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ তার স্বামীকে মারধর করে বেধেঁ ফেলে। তাকে পাশের রুমে নিয়ে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে তার পরনের কাপড় খুলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বাদিকে উলঙ্গ করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং শরীরের লজ্জাস্থানে হাত দেয়। পরবর্তীতে অভিযুক্তরা মোবাইল ফোনে কু-প্রস্তাব দেয় এতে রাজি না হওয়ায় ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

এদিকে বর্বর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে এলাকার মোহর আলী মুন্সি বাড়ির মৃত আবদুর রহিমের ছেলে রহমত উল্লা (৪০), একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার হারাধন ভূঁইয়া বাড়ির শেখ আহমদ দুলালের ছেলে আবদুর রহিম (২০), মামলার প্রধান আসামি বাদলকে ঢাকা কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে ও অস্ত্রসহ দেলোয়ার নামে আরেক জনকে নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ মডেল ওসি থানার ওসি হারুনুর রশিদ জানান, গ্রেফতারকৃত রহমত উল্যা ও আবদুর রহিমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ৭ দিনের রিমাণ্ড র আবেদন করা হয়েছে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, গৃহবধুকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে এবং নির্যাতিতা পরিবারকে আইনি সহযোগীতা দিতে পুলিশ কাজ করছে বলেও তিনি জানান।

এর আগে ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই গৃহবধুর স্বামীর সাথে নিজের ঘরে অবস্থান করলে স্বামীসহ গৃহবধুকে আটক করে অভিযুক্তরা ব্যাপক নির্যাতন চালায়। তারা স্বামীকে বেঁধে রেখে অবৈধ সম্পর্কের কথা বলে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে। এ সময় তার বিবস্ত্র নির্যাতনের নগ্ন ভিডিও ধারণ করে রাখে নির্যাতনকারীরা। তার পর থেকে পুরো পরিবার কে অবরুদ্ধ করে তারা। এক পর্যায়ে তাদের বাড়ি ঘর ছাড়তে বাধ্য করে। ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর রোববার ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবস্ত্র নির্যাতনের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।