ডলার সংকট কাটছে না জ্বালানি খাতে। অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে বারবার চিঠি দিয়ে, বৈঠক করেও সমস্যার সমাধান মিলছে না। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপে সম্প্রতি ডলার ছাড় শুরু হলেও তা চাহিদার তুলনায় নগণ্য।
ডলার সংকট
খোলাবাজারে ফের ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি ডলারের দর উঠেছে ১২৬ টাকা পর্যন্ত। মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ব্যাংক বড় অংকের নগদ ডলার কেনায় এমন সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু ডলারই নয়, ইউরোসহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রারও সংকট দেখা দিয়েছে।
তীব্র ডলার সংকটে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। এতে দেশের শিল্প ও কৃষি খাতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে কয়লা ও গ্যাস আমদানির জন্য। এ অর্থ থেকে ইতোমধ্যে কয়লা আমদানির জন্য একটি এলসি খোলা হয়েছে। এ কয়লা চলতি মাসের শেষদিকে দেশে আসতে পারে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। এই মুহূর্তে ডলার সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে দেশটিতে। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশটির বিমান চলাচল। পর্যাপ্ত ডলার না থাকায় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর পাওনা মেটাতে পারছে না পাকিস্তান।
২০২২ সালে নানা সংকটে কেটেছে দেশের শিল্প খাত। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থার তৈরি হয়। এর মধ্যে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলার সংকট। যার প্রভাব পড়েছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশে ডলার সঙ্কটের কারণে বিদেশ যাত্রায় নানা ধরণের ভোগান্তির মুখে পড়েছেন বিদেশগামীরা। বিশেষ করে বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থী, চিকিৎসা বা হজযাত্রী কিংবা সাধারণ পর্যটক হিসেবে যারা বিদেশে যেতে আগ্রহী ডলার সংগ্রহে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে গত কয়েক মাস ধরেই ডলার সংকট, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের বেশ কয়েকটি প্রধান শিল্প ও উৎপাদন খাতে।