মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করে খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যকর?

মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করে খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যকর?

মাইক্রোওয়েভ

বিশ্বায়নের এ যুগে পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের পৃথিবী। বাড়ছে নগরায়ণ। আর এই নগরায়ণের কারণে প্রায়শ পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের জীবন ধারণ। কর্মজীবনে ৮টা ৫টা’র সিডিউল সামাল দিতে গিয়ে রান্না করা এখন মাথায় উঠেছে। কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিনই আমাদের ঘর থেকে বাইরে যেতে হয়। কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যস্ততা।

ব্যস্ততার কারণে ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে আমাদের রান্নার কাজ সারতে হিমশিম খেতে হয়। তাই অনেকে পুরো সপ্তাহের রান্না একবারে করে ফ্রিজে রাখেন। পরে তা ওভেন দিয়ে গরম করে খেয়ে থাকেন। আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে এখন ইলেকট্রনিকস গ্যাজেট যেন বিলাসিতা।

আর এই বিলাসিতা দেখাতে গিয়ে আপনি নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো? আপনি হয়তো ব্যস্ততা কারণে এমনটি করছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, পরিবারের সবাই খাচ্ছেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করা খাবার। কিন্তু এই অভ্যাস ক্যানসার ডেকে আনতে পারে এমনটাই দাবি করছেন চিকিৎসকরা।

সাধারণ শাকসবজি, ফলমূল কাটার পর এমনিতেই অনেকটা ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও সবজি পানি দিয়ে ভালোকরে ধুয়ে ফুটিয়ে রান্ন করে খেলে তারমধ্যে আর কোনও পুষ্টিগুনই অবশিষ্ট থাকে না। তার উপর আপনি যদি একদিন রান্না করে খাবার ফ্রিজে রেখে ঘনঘন মাইক্রোওভেনে গরম করে খান তাহলে আপনার এই অভ্যাস অজান্তেই অনেক বিপদ ডেকে আনবে আপনার শরীরে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন যে, মাইক্রোওয়েভে গরম করা খাবারে ভিটামিন বি১২ ক্রমে অকার্যকর হয়ে পড়ে। খাবার গরমের সময় এটি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভিটামিন বি১২ নষ্ট করে দেয়। এছাড়া দুধ ও মাংসজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ থাকে।

তাই এসব খাবার যদি মাইক্রোওয়েভে গরম করা হয় তবে তার খাদ্যগুণ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করার পর কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক তৈরি হয়। যেমন বেঞ্জিন, জাইলিন। এগুলি খাবারের সঙ্গে মিশে গেলে শরীরে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়াও প্লাস্টিকের বাক্সে খাবার গরম করে খেলে তা থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়। এর ফলে হতে পারে ক্যানসার। তাই মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম না করাই ভালো। শুধু তাই নয়, হৃদস্পন্দনের গতিরও তারতম্য ঘটে মাইক্রোওয়েভ থেকে নির্গত রেডিয়েশনের কারণে।

যারফলে মাইক্রোওয়েভে ডিম, দুধ, মাংস, মাশরুমজাতীয় খাবার গরম করে খাওয়া সবচেয়ে ক্ষতিকর বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এতকিছুর পরেও মাইক্রোওয়েভে রান্নার বিষয়ে একেবারে নিষেধাজ্ঞা করছেন না বিশেষজ্ঞরা।

কারণ, ছোটোখাটো এই ইলেকট্রিক গ্যাজেট যেকোনও জায়গায় যেকোনও ভাবে বহন করা যায়। যারফলে যখন যেভাবে প্রয়োজন রান্নাও সেরে ফেলা যায়। তবে দরকার সঠিক পাত্রের। কারণ, রান্নার সময় মাইক্রোওয়েভ প্রুফ পাত্র ব্যবহার করলে বিপদের ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে। -কোলকাতা২৪