অবশেষে জানা গেল কিম জং উনের সর্বশেষ অবস্থা

অবশেষে জানা গেল কিম জং উনের সর্বশেষ অবস্থা

ছবিঃ সংগ্রহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের স্বাস্থ্য ঘিরে সাম্প্রতিক জল্পনাকল্পনায় পানি ঢেলে দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা। তাদের মতে, কিম বেঁচে আছেন, সুস্থ আছেন। তবে সংশয় পুরোপুরি কাটছে না।

দেশের ‘ঈশ্বরপ্রতিম' নেতা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রকাশ্যে সরকারি অনুষ্ঠান থেকে কার্যত উধাও হয়ে গেলে প্রশ্ন জাগে বৈকি। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গত ১১ এপ্রিল থেকে এমন বেপাত্তা হয়ে পড়ায় নানারকম গুজব শোনা যাচ্ছে। এমনকি পিতামহ ও উত্তর কোরিয়া রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়নি। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী হৃদযন্ত্রের জটিল অপারেশনের পর তিনি মৃতপ্রায়। কেউ বলছেন, করোনা ভাইরাসের ভয়ে তিনি নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন।

এমন সব জল্পনাকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা। দুই কোরিয়ার পুনরেকত্রীকরণের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী কিম ইএয়ন চুল রোববার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ভেতরে কী ঘটছে, তা জানার জন্য সরকারের গোয়েন্দা বিভাগের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। তাই তিনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারেন যে, সে দেশে অস্বাভাবিক কোনো প্রবণতা চোখে পড়ছে না। উত্তর কোরিয়ার নেতাকে ঘিরে সব তত্ত্বও উড়িয়ে দেন তিনি। যে হাসপাতালে কিম জং উনের অপারেশন হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেখানে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের কোনো ব্যবস্থাই নেই বলে কিম ইএয়ন চুল উল্লেখ করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা মুন চাং ইন বলেন, এই প্রশ্নে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘কিম জং উন জীবিত এবং বহাল তবিয়তেই আছেন।'' তার মতে, গত ১৩ এপ্রিল থেকে কিম ওনসান এলাকায় রয়েছেন। কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ চোখে পড়েনি।

উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন-ভিত্তিক এক সূত্রের দাবি, স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে সম্ভবত কিমের নিজস্ব একটি ট্রেন সেখানে দেখা যাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদের পররাষ্ট্র ও পুনরেকত্রীকরণ কমিটির সভাপতি ইয়ুন সাং হিউন অবশ্য মনে করেন, প্রকাশ্যে উত্তর কোরিয়ার নেতাকে দেখা না যাবার অর্থ, তিনি মোটেই স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম করছেন না। তিনি সম্ভবত অসুস্থ অথবা করোনা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। গত সপ্তাহে চীন থেকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের একটি দল উত্তর কোরিয়া যাওয়ায় এই সম্ভাবনা আরো জোরালো হয়েছে। অতিরিক্ত ধূমপান, ক্লান্তি ও স্থূলতার কারণে কিম-এর জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে কিম জং উন-কে সম্প্রতি সরাসরি দেখা না গেলেও পরোক্ষভাবে তার উল্লেখ করা হয়েছে। ওনসান কালমা উপকূলে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য মহান নেতা শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৪ সালেও কিম জং উন প্রায় ছয় সপ্তাহের জন্য উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। সে সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছিল যে, গোড়ালি থেকে সিস্ট দূর করতে তার একটি অপারেশন হয়েছিল। ডয়চে ভেলে।