মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপসহ ১৫জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিষ্ট

মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপসহ ১৫জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিষ্ট

নিহত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ

কক্সবাজারেরর টেকনাফে মিজর(অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা মামলার অভিযোগপত্র(চার্জশিট) অবশেষে  আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।  সিনহাকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তার নির্দেশেই বাহারছড়া ক্যাম্পের পরিদর্শক লিয়াকত আলী সিনহাকে গুলি করেন। র‌্যাবের অভিযোগপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন র‍্যাব-১৫-এর কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. খায়রুল আলম।।

তিনি বলেন, সিনহা হত্যা মামলাটি আমরা নানাভাবে তদন্ত করেছি। তদন্তে পাওয়া তথ্যগুলো সাজিয়ে চার্জশিট হিসেবে জমা দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যার ঘটনা তদন্ত নেমে র‌্যাব এ ঘটনায় ১৫ জনের সংশ্লিষ্টটা পেয়েছে। অভিযুক্তদের মাঝে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপসহ ১৪ জন কারাগারে রয়েছেন। সাগর নামের ওসি প্রদীপের এক সহযোগীকে পলাতক দেখানো হয়েছে।’ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গুলি করার আগে লিয়াকত তার সঙ্গে ফোনে পরামর্শ করেছিলেন। ওসির ‘প্ররোচনা ও নির্দেশনাতেই’ লিয়াকত ঠান্ডা মাথায় সিনহাকে গুলি করে হত্যা করেন।

পরে প্রদীপ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিনহার ‘মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পায়ের জুতা দিয়ে আঘাত করে’ বিকৃত করার চেষ্টা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে টেকনাফ থানার এসআই দুলাল রক্ষিতকে, যিনি সিনহার মৃত্যুর পর মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন। এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র‌্যাব হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিনজন ছাড়াও এপিবিএন এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করে।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।  ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন দুই সঙ্গীকে নিয়ে।

কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

কিন্তু পুলিশের দেয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে।

সিনহার বোন আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে অত্মসমর্পণ করেন। তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।